এখন থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়ের কাজটি করবে। আর আইইডিসিআর তাদের কাজ গবেষণায় সীমাবদ্ধ রাখবে।
রোববার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন জানিয়েছেন। তিনি করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আইইডিসিআরের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি রোববার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, এখন থেকে আইইডিসিআর শুধু গবেষণার অংশ হিসেবে নমুনা সংগ্রহ করবে। রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্য স্যাম্পল সংগ্রহ আইইডিসিআরের কাজের মধ্যে পড়ে না। আসলে আইইডিসিআর এপিডেমিওলজিক্যাল সার্ভিলেন্সের অংশ হিসেবে নমুনা সংগ্রহ করে। হাসপাতালগুলোয় এখন পরীক্ষার সুবিধা আছে। এজন্য কমিউনিটি লেভেলে রোগ নির্ণয়ের জন্য যে নমুনা পরীক্ষা, তার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়ে নিয়েছে। তারা এখন থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে এবং আইইডিসিআরের বাইরে অন্য ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করবে।
ডা. মুশতাক হোসেন জানান, নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার জন্য যে নমুনা সংগ্রহ করা প্রয়োজন, সেগুলোই শুধু করবে আইইডিসিআর। নমুনা পরীক্ষার চাপে আইইডিসিআর তাদের মূল গবেষণা ঠিকমতো করতে পারছিল না। এছাড়া অন্যান্য ল্যাবরেটরিতে যে নমুনা পরীক্ষা চলছে, তার একটা অংশ আইইডিসিআর পুনরায় পরীক্ষা করবে। বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রেফারেন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে কোয়ালিটি কন্ট্রোলের জন্য। যেসব নেগেটিভ রেজাল্ট হয় সেগুলো পুনরায় পরীক্ষা করবে আইইডিসিআর।
চলতি বছরের শুরুর দিকে চীনের উহানে নতুন করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশে এই রোগ প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআর।
করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেওয়ার আগেই বাংলাদেশে কারও এই ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা আইইডিসিআরের ল্যাবরেটরিতেই পরীক্ষা হয়। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত করে তারা।
এরপর ধীরে ধীরে নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকার মধ্যেও আইইডিসিআরের বাইরে নমুনা পরীক্ষায় সায় দিচ্ছিল না সরকার।
সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ হয়। তবে আইইডিসিআরের তত্ত্বাবধানেই এই কার্যক্রম চলছিল বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।
আইইডিসিআরসহ দেশের ৩১টি গবেষণাগারে কোভিড-১৯ শনাক্ত পরীক্ষা চলছিল। এখন আইইডিসিআর এই দায়িত্ব থেকে সরে গেল।