মোড়লী মুদ্রা ডলার এখন লকডাউনে

বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রাণ সঞ্চারক করার যে মোড়লী মুদ্রা তা এখন লকডাউনের খপ্পরে পড়েছে। স্যার ট্রাম্প এখন টিক্কা খুঁজে। বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা বলেছে করোনা পেনডামিকের কারনে বিশ্ব ব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারনণ নিরব দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । তবে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে তৃতীয় অনুন্নয়নশীল রাষ্ট্র গুলো । বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, এডিবি সব সংস্হার সুদী ব্যবসায় এখন করোনার থাবায় স্তব্ধ ।

বিশ্ব ব্যাংক গোষ্ঠী পাঁচটি আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিবার যারা দরিদ্র দেশে লিভারেজযুক্ত ঋণ দিয়ে থাকে। এটা বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বিখ্যাত উন্নয়ন ব্যাংক এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন গ্রুপের পর্যবেক্ষক। ব্যাংকটি ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক হলে ও তারাও এখন মাফিয়া ব্যবসায় বিনিয়োগে আগ্রাহী । তা হলো করোনা ভ্যাকসিন । ঐ দিকে বিল গেটস ও এক পায়ে খাঁড়া । মানুষ মরে যাক, ছালা ফেঁটে যাক তাতে কিছু যাই আসে না। খাডি খাডি অর্থ উপর্জনের মোক্ষম সুযোগ করোনা ভ্যাকসিনের দিকে । ভ্যাকসিন ব্যবসায়ের ধরন বচন বুঝে আগে ভাগেই স্যার ট্রাম আজ ঘোষনা দিল এ বছরের শেষের দিকে করোনার ভ্যাকসিন মার্কেটে চলে আসবে ।

ঐতিহ্য রয়েছে মার্কিন কংগ্রেস ১৭৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ডলার প্রবর্তন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিশ্ব মুদ্রা বাজারে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘হার্ড কারেন্সি’ হিসেবে পরিগণিত। প্রায় শোয়া দু’শো বছর ধরে বিশ্বব্যাপী লেনদেনে এ মোডলী অর্থ সব দেশ কে ক্রয় করতে হত। অস্ত্র থেকে বস্ত্র । সেন্ডেল থেকে প্যান্ডেল , মাদক থেকে মহাজনত্ব । শর্তহীন অর্থে এ মোডলী ডলার ক্রয় করতে হবে । প্রায় দু শো বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ডলারের যে বাণিজ্য করে আসছে তা কেবল এ দু মাসে এ ডলার বাণিজ্য ম্রিয়মান হয়ে পড়েছে তা ও সাময়িক । তবে ইউরো আসার পর ডলার কারেন্সি একটু ধাক্কা খেলেও তাতে তেমন বড় ছুট লাগেনি । তবে ইউরো বের হওয়ার পর কোন কোন দেশ ডলারের উপর নেতিবাচক মনোভাব পোষন করলে পরে তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইরাক বনাম সাদ্দাম কে কৌশলে পথ থেকে সরিয়ে দেয়া হলো । পরে অন্যান্য যে কটি রাষ্ট্র সুর মিলিয়েছিল , তার নিশ্চুপ হয়ে পড়ে । কিন্ত বিধি বাম সে সব রাষ্ট্রের প্রধানগন রেহাই পায়নি । যেমন লিবিয়া , আফগান উল্লেখযোগ্য।

আমরা অনেকেই বুঝি না , প্রত্যেক কিছুর একটা পাওয়ার আছে । এটা গাডী হোক , ঘোড়া হোক কিংবা একটি পরিবার নতুবা ব্যক্তি হোক তার ও একটা পাওয়ার বা শক্তি রয়েছে । এ শক্তি টা কি ? মনে করুন এ করোনা কালীন দুর্যোগ সময়ে একজন ব্যক্তি বা পরিবারের কাছে কত টাকা জমা আছে , এটা হচ্ছে তার এখন শক্তি বা পাওয়ার । অনুরুপ একটি রাষ্ট্রে কি পরিমান
বৈদেশিক মুদ্রা কারেন্সী রির্জাভ আছে সেটি হল
রাষ্ট্রের পাওয়ার ।
তাই এ মোডলী মুদ্রায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার ইংরেজি ভাষায়: “Foreign Exchange Reserves “কি পরিমান আছে । বলতে গেলে কোনও দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে (বা মুদ্রাবিষয়ক কর্তৃপক্ষের কাছে) বৈদেশিক মুদ্রায় গচ্ছিত সম্পদের মজুদকে বোঝায়। এভাবে গচ্ছিত বৈদেশিক মুদ্রা প্রধানত আমদানি মূল্য এবং বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের সুদ, ইত্যাদি পরিশোধে ব্যবহৃত হয়। পণ্য ও সেবা রপ্তানি ও বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের স্বদেশে পাঠানো অর্থ , ইংরেজিতে যাকে Remittance রেমিট্যান্স বলে তাকি । তা থেকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ গড়ে ওঠে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বৈদেশিক ঋণবাবদ প্রাপ্ত অর্থ এবং সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের অর্থ। সাধারণত শক্তিশালী বা অনমনীয় মুদ্রা (ইংরেজি Hard currency) যা আন্তর্জাতিক বাজারে সহজে বিনিময়যোগ্য (যেমন মার্কিন ডলার, ব্রিটিশ পাউণ্ড, ইউরো, ইয়েন, ইত্যাদি), সেটিতেই বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ গড়ে তোলা হয়। কোন দেশ স্বীয় দেশেরই কোন ব্যাংকে বা কোন বিদেশে অবস্থিত ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ সংরক্ষণ করতে পারে। সে হিসেবে মার্কিন ডলার যা বাইরে আছে তো স্তব্দ বা করোনার কারনে লক ডাউনে পড়ে আছে ।
পুরানো তথ্য মতে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের হিসাব অনুযায়ী, বাজারে $৩৮০ বিলিয়ন (৩৮ হাজার কোটি) ডলার চালু আছে, যার দুই-তৃতীয়াংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে চালু। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ এর পরিমাণ দ্বিগুন হয়ে $৭৬০ বিলিয়নে (৭৬ হাজার কোটি) পৌঁছেছে। এর অর্ধেকই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে। ২০২০ সালে এসে কি পরিমান ডলার যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে পড়ে রয়েছে তা একবার ভেবে দেখুন । স্যার ট্রাম্পের অর্থনীতি কিভাবে টি েক থাকে ।

আসুন এ মোডলী মুদ্রা সম্পর্কে একটু জেনে নিই । আমেরিকান বা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা মার্কিন ডলার মুদ্রা প্রতীক: $; ব্যাংক কোড: USD) হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী মুদ্রার নাম। এর কাগুজে নোটের নকশা অনুযায়ী একে চলতি ভাষায় 'গ্রীন বাক' হিসেবেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। এর সাংকেতিক চিহ্ন $, তবে অন্যান্য দেশের ডলার নামক মুদ্রা থেকে আলাদা করার জন্য একে আন্তর্জাতিক দলিলাদিতে US$ লেখা হয়। এর এক শতাংশের নাম সেন্ট। ১ ডলার ১০০ সেন্ট এর সমতূল্য। এটি বর্তমানে বিশ্বের সর্বাধিক প্রচলিত মুদ্রা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আরও কিছু দেশ ডলারকে সরকারী মুদ্রা হিসাবে ব্যবহার করে। মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক ব্যবহার দ্বিবিধ। প্রথমতঃ এটি আন্তর্জাতিক দেনা-পাওনা মেটানোর মুদ্রা। দ্বিতীয়তঃ এটি বহুল প্রচলিত একটি রিজার্ভ কারেন্সী। তৃতীয়ত এ ডলার বিক্রির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটা বিশাল বাণিজ্য ছিল । যা এখন করোনা কালীন ডলার এখন লক ডাউনে ।

সাইয়িদ মাহমুদ তসলিম
সাংবাদিক, বাফেলো, নিউ ইয়র্ক

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পা-বিহীন টিকটিকিসহ শতাধিক নতুন প্রজাতির আবিষ্কারের বছর ২০২৩
গলাব্যথা সারাতে কেন লবণ-পানি পান করবেন
থার্টিফার্স্টে মেট্রোরেলের আশপাশে ফানুস না ওড়ানোর অনুরোধ
মাশরাফির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন সোহান
ঢাবির অধীনে এডুকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির সুযোগ
আজ পীরগঞ্জ যাচ্ছেন শেখ হাসিনা
প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে হবে
দুই বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলো সৌদি
প্রথম দিনেই ‘সালার’ আয় ১৭৫ কোটি
টানা তিন বছর মুনাফা না থাকলে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা নয়