গত বছরের এপ্রিলে ২৪২ কোটি ১২ লাখ ১০ হাজার ডলারের রফতানি হয়েছি। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০৫ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলারের রফতানি কমেছে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বরাতে এই তথ্য জানায় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, গত ২৯ এপ্রিল সকাল ১০টা পর্যন্ত ১ হাজার ১৫০ কারখানার মোট ৩১৮ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়। এসব ক্রয়াদেশের আওতায় ছিল ৯৮ কোটি ২০ লাখ পিস পোশাক। অন্যদিকে এসব কারখানায় কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ২২ লাখ ৮০ হাজার। করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চ থেকেই পোশাক রফতানিতে ধস নামতে থাকে। তার পরও ওই মাসে ২২৫ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়।
তবে সেটি গত বছরের মার্চের চেয়ে ২০ শতাংশ কম ছিল। পোশাক খাতের জন্য চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের মধ্যে এটিই ছিল ভয়াবহ। তবে শেষ পর্যন্ত মার্চকেও ছাড়িয়ে গেল এপ্রিল। এক মাসের ব্যবধানেই ১৮৯ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি কমলো।
চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) শুরু থেকেই রফতানি নিয়ে কিছুটা খারাপ সময় পার করছিল তৈরি পোশাক খাত। রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) পোশাক রফতানি বেড়েছিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৭ শতাংশ।
এর পরের মাসেই বড় ধরনের পতন হয় পোশাক রফতানির। সে সময় রফতানি হ্রাস পেয়েছিল ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। রফতানিতে এ নেতিবাচক ধারা বজায় থাকে নভেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে তৈরি পোশাকের রফতানি হ্রাস পেয়েছিল যথাক্রমে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, ১৯ দশমিক ৭৯ ও ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
এরপর ডিসেম্বরে কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসে তৈরি পোশাক রফতানি। ওই সময় বাংলাদেশ থেকে পণ্যটির রফতানি বেড়েছিল আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। কিন্তু জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ধসের ধারায় রয়েছে তৈরি পোশাক রফতানি। এর মধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে তৈরি পোশাক রফতানি কমেছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৯৮ ও ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এদিকে চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত তিন মাসে পোশাক রফতানি ৫০০ কোটি ডলার হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিজিএমইএ। সংগঠনটির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রফতানি হবে ৩৭০ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার ডলারের।
যেখানে গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৮৬০ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এ হিসেবে তিন মাসের সম্মিলিত রফতানি হ্রাস পেতে যাচ্ছে ৪৯০ কোটি ডলার বা ৫৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ।