আম্পানের ব্যাস ৭২০ কিলোমিটার, যা সাতক্ষীরা থেকে টেকনাফের দূরত্বের সমান। শক্তিশালী এই ঝড়ে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারের যথেষ্ট প্রস্তুতি সত্ত্বেও উপকূলের জনজীবনে সাইক্লোন স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করে যায়। অনেকেই প্রিয় মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা বয়ে বেড়ান বাকিটা জীবন। আম্পানকে সিডরের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। সেই সিডরে ৩ হাজার ৪০৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। ২০০৭ সালের নভেম্বরে হয়ে যাওয়া সিডর এখনও দগদগে ঘায়ের মতোই উপকূলের মানুষের মনে লেগে রয়েছে। ২০০৯ সালের আইলায় মারা যায় ১৯০ জন।
২০১৩ সালের মহাসেনে ১৮ জন। তবে গেল বছর বুলবুলে খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। এর আগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি লোক মারা যায় ১৯৭০ সালে। ওই সাইক্লোনে প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা যায়। এরপর ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যায়।
গত শনিবার গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সৃষ্টি হয়। এরপর এটি শক্তি সঞ্চয় করতে করতে এখন সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। সিডরের উৎপত্তি হয়েছিল আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছে। আম্পানের উৎপত্তিও বঙ্গোপসাগরের একই জায়গায়।
আবহাওয়া অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক শামসুল আলম বলেন, আম্পান এখন সাগরে আছে। সাগরে এর বাতাসের গতিবেগ এখন অনেক বেশি। সিডরের চেয়েও বেশি। কিন্তু ঝড় এখনও ৭০০ কিলোমিটার দূরে আছে। আজ সারা রাতের বৃষ্টিতে আনেকখানি শক্তি হারাবে আম্পান। তবে তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতি হবেই। আমাদের ফসলের ক্ষতি হবে সবচেয়ে বেশি। একদিকে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে জলোচ্ছ্বাস। এ দুই মিলিয়ে ক্ষতি আকার হবে অনেক।
তিনি বলেন, সিডরের মতো প্রাণহানি হবে না এটা নিশ্চিত। কারণ, আমরা এখন অনেক সংগঠিত। আশ্রয়কেন্দ্রও অনেক। আর আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়ায় প্রাণহানি তেমন হবে না বলেই আশা করছি। তবে আশার কথা হচ্ছে, বৃষ্টি হলে ঝড় দুর্বল হতে পারে। বৃষ্টি শুরু হলে আমাদের জন্য বিষয়টি মঙ্গলজনক হতে পারে।