করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও এক কর্মকর্তার মৃত্যু

করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও এক কর্মকর্তার মৃত্যু
করোনা উপসর্গ নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের এক কর্মকর্তা মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (২১ মে) ভোররাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে হাসিবুর রহমান না‌মের এ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম আজাদ। তি‌নি ব‌লেন, হাসিবুর রহমান করোনার উপসর্গ নিয়ে ভো‌রে মারা গেছেন। ক‌রোনার টে‌স্ট কর‌তে দেয়া হ‌য়ে‌ছে। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূ‌ত্র জানায়, ব্যাংকের লোকাল অফিসের এডমিন শাখায় এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসে‌বে কর্মরত ছিলেন হাসিবুর রহমান। মৃত্যুর সময় এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। তার স্ত্রী একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ছেলেটি ক্লাস ওয়ানে এবং মেয়েটির ক্লাস থ্রিতে পড়ে।

হাসিবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার বালিয়াটি উপজেলায়। জনতা ব্যাংকে ২০০৯ সালে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

সূ‌ত্র জানায়, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের এডমিন শাখায় কিছুদিন আগে আরেক কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই এডমিন শাখা ১৪ দিন লকডাউন করা হয়। ওই কর্মকর্তার পাশেই বসতেন হাসিব। গত সপ্তাহে তিনি জ্বর জ্বর অনুভব করেন। গত রোববার থেকে লক্ষণগুলো তীব্র হতে থাকে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে পুরান ঢাকার বাসায় তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়। রাত ১২টায় জ্বর, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট তীব্র হয়। পরে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয় এবং ভোরে তার মৃত্যু হয়।

লোকাল অফিসার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোবারক হোসেন বলেন, তার বিভাগের এক কর্মকর্তার করোনা ধরা পড়ে। নিয়মানুযায়ী বিভাগটি লকডাউন ছিল। কিন্তু এতদিন পর হাসিব কীভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, সেটা বুঝতে পারছি না। তার করোনার পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়েছে, কিন্তু রেজাল্ট পাওয়া যায়নি। তবে করোনার সবগুলো লক্ষণ তার শরীরে দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেন। তার মতো কর্মঠ ব্যাংকারের অকাল প্রয়াণে আমরা শোকাহত। তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ পর্যন্ত এ ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন ৫৫ জন ব্যাংককর্মী। মারা গেছেন চারজন। ত‌বে জনতা ব্যাংকের এ কর্মকর্তার কো‌ভিড-১৯ প‌জে‌টিভ আসলে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়া‌বে পাঁ‌চে।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূ‌ত্রে জানা গে‌ছে, মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৩০ কর্মকর্তা। এর পরই রয়েছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের ১০ জন। এ ছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের তিনজন, রূপালী ব্যাংকের তিনজন, সাউথইস্ট ব্যাংকের তিনজন, সিটি ব্যাংকের দুজন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের দুজন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের একজন ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের একজন আক্রান্ত হয়েছেন।

করোনায় মৃত্যুবরণ করা চারজনের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের একজন, রূপালী ব্যাংকের একজন ও দি সিটি ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা রয়েছেন।

মৃতদের মধ্যে গত ১৭ মে রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার (পিও) মাহবুব এলাহী কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে মারা যান। এর আগে ১৫ মে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সহিদুল ইসলাম খান রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকা‌লে তার বয়স হ‌য়ে‌ছিল ৪৯ বছর। এর আ‌গে দ্য সিটি ব্যাংকের আরও দুজন মারা যান। তা‌দের ম‌ধ্যে ১২ মে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবু সাঈদ না‌মের এক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। তিনি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সেন্ট্রাল ক্লিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছি‌লেন। তার আগে ২৬ এপ্রিল ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের মুজতবা শাহরিয়ার নামের এক কর্মকর্তা মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এর বাইরে করোনা লক্ষণ নিয়ে চট্টগ্রামের আরও দুই ব্যাংক কর্মকর্তা মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

চারদিনের ছুটিতে ব্যাংক ও পুঁজিবাজার
ইসলামী ব্যাংকে এস আলমপন্থি ২০০ কর্মকর্তা বরখাস্ত, ওএসডি ৫ হাজার
বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের বক্তব্য
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ৫৪ গ্রাহকের টাকা উধাও
পাঁচ ব্যাংক চূড়ান্তভাবে একীভূত করতে বসছে প্রশাসক
ডিজিটাল ব্যাংক খোলার আবেদনের সময় বাড়ল
একীভূতকরণে তিন ব্যাংকের সম্মতি, সময় চায় দুটি
একীভূত হতে রাজি গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
ব্র্যাক ব্যাংকের নতুন এমডি ও সিইও হলেন তারেক রেফাত উল্লাহ খান
ঋণ, ওভারড্রাফট ও গ্যারান্টির জন্য মাস্টার সার্কুলার জারি