গত বৃহস্পতিবার প্লাটফর্মটি তাদের প্রথম আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্লাটফর্মটি সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারের বিবেচনার্থে লকডাউন থেকে বের হয়ে আসার একটি মডেল কৌশল কাঠামো উপস্থাপন করে।
‘রিসারজেন্ট বাংলাদেশ’ মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, বিল্ড ও পলিসি এক্সচেঞ্জের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত একটি প্লাটফর্ম।
এটির লকডাউন থেকে প্রস্থান কাঠামোটির মূল লক্ষ্য কভিড-১৯-এর কোনো রকম ঝুঁকি ছাড়াই কীভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রার গতিকে ফিরিয়ে আনা যায়। কাঠামোটি ধীরে ধীরে ও ধাপে ধাপে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুদ্ধারের পরামর্শ প্রদান করে। তবে সম্পূর্ণভাবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আয়ত্তে আসার পর। এই মডেলটি কেন্দ্রীভূত পর্যালোচনা এবং পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, সাবধানতা পর্যালোচনা, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোকে বিশেষায়িত জোনের আওতায় আনা, ধাপে ধাপে খুলে দিতে নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক খাত বা সামাজিক খাত নির্ধারণ, স্বাস্থ্য ও অস্বাস্থ্য খাতসংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ নির্ধারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। কাঠামোটি একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে, যার ভিত্তিতে সুপারিশ করা হয় কখন, কোথায় ও কীভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরায় চালু করা যাবে।
আলোচনা সভায় এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির সূচনা বক্তব্য প্রদান করে। আলোচকদের মধ্যে আরো ছিলেন পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, বিল্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ।
নিহাদ কবির বলেন, যদি করোনা পরিস্থিতি খুব একটা স্থিতিশীলতার দিকে সহসাই না যায়, তবে তিনি অল্প কিছুদিনের জন্য পুনরায় কঠোর লকডাউন দেয়ার পরামর্শ দেন। যাতে করে সামগ্রিক অর্থনীতি সামনে একটি সুদিন দেখতে পায়। চাহিদা ও জোগানের সাপ্লাই চেইন যদি স্বাভাবিক হয়ে আসে, তবে অর্থনীতি আবারো তার গতি ফিরে পাবে বলে তিনি জানান।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এ বছর ৩ শতাংশ কমে যেতে পারে। বৈশ্বিক বাণিজ্যও ১৩-৩০ শতাংশ কমে আসতে পারে। এশিয়ার রফতানি ৩৬ শতাংশ কমে আসতে পারে এবং সারা বিশ্বে প্রায় ১৯৫ মিলিয়ন কর্মজীবী তাদের চাকরি হারাতে পারে।
বিল্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। যদিও কিছু কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত পরিসরে চলছে। লকডাউন-পরবর্তী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় কৌশল নির্ধারণে আইন ও নীতিমালার কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন শ্রীলংকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ, বেসিসের সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম, সাবেক আইন সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আব্দুল করিম, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এনএইচএস ট্রাস্ট ডাক্তার শাকিল ফরহাদ, ডেলয়েটের নির্বাহী উপদেষ্টা শরিফ ইসলাম, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের জেনারেল সেক্রেটারি এসএম রাশেদুল ইসলাম, পিডব্লিউসির পরিচালক প্রাণশু জৈন, অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসাদ ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রাশেদুর রহমান। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম মুক্ত আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন।