জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম বন্ধ থাকা পারফিউম কেমিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের স্পন্সর ও পরিচালকদের হাতে থাকা শেয়ার ক্রয় করবে আল-হারামাইন। এছাড়া গ্রুপটি পারফিউম কেমিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের ঋণ সংক্রান্ত সমস্যাও দেখভাল করবে। তবে কী দামে স্পন্সর ও পরিচালকদের শেয়ার কেনা হবে তা নিশ্চিত করা হয়নি।
চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্প এস্টেটে অবস্থিত পারফিউম কেমিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটি মানোলা ব্র্যান্ডের ক্রিম এবং ট্যালকম পাউডার তৈরি করত। এসব পণ্য একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিল। কোম্পানিটির পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ২০০৪ সালে উৎপাদন কমাতে শুরু করে। বিনিয়োগের অভাবে এবং পণ্যের বৈচত্র্যের কারণে কোম্পানিটি প্রতিযোগীদের কাছে এরপর থেকে বাজার হারায়। এরপর ২০১৭ সালের দিকে কোম্পানিটি সম্পূর্ণরূপে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
অপরদিকে জানা যায়, আল-হারামাইন গ্রুপ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য পারফিউম তৈরি করবে। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হবে।
বিএসইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পারফিউম কেমিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকরা কোম্পানি চালাতে পারছেন না। ফলে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তাই তারা এটি বিক্রি করতে রাজি হয়েছেন। লোন নিয়ে কোম্পানির কিছু জটিলতা রয়েছে। জটিলতাগুলো সমাধান হয়ে গেলেই টেকওভার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট ২০০৯ সালে গঠিত হয়। এই বাজারের মূল লক্ষ্য ছিলো দুর্বল এবং বিলুপ্ত কোম্পানিগুলো নিয়ে কাজ করা। পারফিউম কেমিক্যালসকেও মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে স্থানান্তর করা হয়েছিলো। তবে বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কোম্পানিটিকে পুনরুজ্জীবিত এবং যন্ত্রপাতিগুলো ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-হারামাইন গ্রুপ অফ কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। গ্রুপটি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য পারফিউম তৈরি করে। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশীয় পারফিউম কোম্পানিকে বাঁচাতে মাহতাবুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তিনি এটি কেনার প্রস্তাব দেন।
বিএসইসির কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরবর্তীতে কোম্পানিটির স্পন্সর-পরিচালকদের শেয়ার কিনতে রাজি হয় গ্রুপটি। কোম্পানির মালিকরাও সরঞ্জাম এবং সম্পদের ক্ষতির কারণে বিক্রি করতে রাজি হয়েছেন।
জানা যায়, কোম্পানির কারখানা বিসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে হওয়ায় ১০ লাখ টাকার বেশি ফি বকেয়া আছে। কারখানাটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কোম্পানিটি কোনো ফি দেয়নি।
পারফিউম কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশের রাসায়নিক শিল্পের অন্যতম পথিকৃৎ। ১৯৭২ সালে একটি অংশীদারিত্ব হিসাবে শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। এছাড়া কোম্পানিটি ১৯৯১ সালে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয় এবং ১৯৯৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।