আজ শনিবার (২৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ৩২ জন পুরুষ এবং দুইজন নারী। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৩ জন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে সাতজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৬৯৫ জনের।
জানানো হয়, নতুন যে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ জন, খুলনা বিভাগের একজন, রাজশাহী বিভাগের চারজন, সিলেট বিভাগের চারজন এবং রংপুর বিভাগের দুইজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ জন এবং বাসায় চারজন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ১৮৫ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৩১৮ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৫ হাজার ৫৯টি। একই সময় পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ১৫৭টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে তিন হাজার ৫০৪ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে সাত লাখ ১২ হাজার ৯৮টি।
ব্রিফিংয়ের শুরুতেই জানানো হয়, করোনা সন্দেহে নমুনা পরীক্ষায় আরো একটি বেসরকারি ল্যাব সংযোজিত হয়েছে। এটি হলো ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে অবস্থিত শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি (প্রাইভেট) লিমিটেড। এ নিয়ে বর্তমানে ঢাকাসহ সারা দেশে মোট ল্যাবের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৭টিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের এসব ল্যাবের মধ্যে ৫৮টি ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার ফল এসেছে বলে জানানো হয় ব্রিফিংয়ে।
সারা দেশের করোনা হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্যে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে সাধারণ শয্যার সংখ্যা চার হাজার ২৯৩টি এবং আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৭৯টি, সারা দেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১২ হাজার ৭৩টি, সারা দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ২৭৫টি এবং সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ৪৪৫টি।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ৭২৬ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৫৯ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ২৪ হাজার ৯৩ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯ হাজার ৮২৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ২৬৭ জন।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ৩১২ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৫২০ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট তিন লাখ ৩৬ হাজার ৭০২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৭৭ হাজার ১৫৭ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৩ হাজার ৯১৩ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর'র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৩৬৯টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে এক কোটি ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার ৫৩৪ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো একজন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ৪০৩ জনে। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।