এদিকে নতুন বিধিনিষেধ আরোপের পর গ্রামীণফোন বলেছে, বিটিআরসির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে রিট আবেদনটি প্রত্যাহার করতে চায় তারা।
গ্রাহক সংখ্যায় দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনকে এসএমপি ঘোষণার এক বছরের মাথায় গত ২১ জুন দুটি বিধিনিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসি।
প্রথম নির্দেশনায় গ্রামীণফোনের নতুন সেবা, প্যাকেজ বা অফার চালু করা কঠিন করা হয় এবং দ্বিতীয় নির্দেশনায় নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলানোর ক্ষেত্রে গ্রাহকের গ্রামীণফোন ছাড়ার সুযোগ সহজ করা হয়।
বিটিআরসির ভাষ্য, টেলিযোগাযোগ ব্যবসায় ‘একক আধিপত্য তৈরির অবস্থা’ যাতে তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে ‘গ্রাহকের স্বার্থে’ এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে গ্রামীণফোন বলেছে, বিটিআরসির এসব নতুন নির্দেশনাই বাজারে প্রতিযোগিতার পরিবেশ এবং গ্রাহক স্বার্থের ‘পরিপন্থি’।
বিটিআরসির ওই বিধিনিষেধ বুধবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। তা স্থগিত চেয়ে গত রোববার হাই কোর্টে রিট আবেদন করে গ্রামীণফোন।
তবে বিটিআরসির সঙ্গে আলোচনা করেই বিষয়টির সুরাহা করতে চাইছে কোম্পানিটি। যে কারণে আপাতত রিট আবেদনটির শুনানি না করার জন্যই বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে।
রিট আবেদনের বিষয়ে গ্রামীণফোনের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, “বিটিআরসি থেকে যে দুটো নির্দেশনা এসেছে গ্রামীণফোনের উপরে, সেগুলো চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।”
বিটিআরসি ২০১৮ সালে একটা প্রবিধিমালা জারি করে। এ প্রবিধানমালার মূল কথা হচ্ছে, বাজারে যদি কোনো অপারেটর সংখ্যাগুরু অবস্থানে থাকে অর্থাৎ কোনো অপারেটরের যদি বাজারে ৪০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার থাকে, তাহলে সেটা ‘সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার’ বা এসএমপি।
আর কোনো মোবাইল অপারেটর এসএমপি হলে তার উপরে বিটিআরসি কিছু বিধি নিষেধ আরোপ পারবে অন্যান্য অপারেটরের তুলনায়।
বাজারে একমাত্র এসএমপি মোবাইল অপারেটর হচ্ছে গ্রামীণফোন। এই কারণে বিটিআরসি গ্রামীণফোনের উপর বিধি-নিষেধ দিয়েছে।
অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর বলেন, “কিন্তু ২০১৮ সালের এসএমপি প্রবিধিমালার ৯ বিধি অনুযায়ী শুধু ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে এসএমপি হওয়ার কারণেই বিটিআরসি আমাকে নির্দেশনা দিতে পারবে না।
“আমার উপরে নির্দেশনা দিতে হলে বিটিআরসির কাছে সে কারণ থাকতে হবে যে, এসএমপি হিসেবে আমার কোনো একটা আচরণ, কাজের কারণে বাজারে প্রতিযোগিতা ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু বিটিআরসি যখনই বিধিনিষেধ দিচ্ছে, এই ধরনের কারণ সাপেক্ষে দিচ্ছে না। হাই কোর্টের রায়েও আছে, ২০১৮ সালের প্রবিধান না মেনে বিটিআরসি কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে না। এটা বিটিআরসি মানছে না।”