বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বিকালে ডিএনসিসি’র নগর ভবনে গণমাধ্যমের উদ্দেশে এক ভিডিওবার্তায় মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কাছে বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ফোন এসেছে যে, আমরা যদি ঢাকার পশুর হাট বন্ধ করে দেই, তবে তাদের কী হবে! এটিই কিন্তু এখন বাস্তবতা। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কিন্তু একটি বছর অপেক্ষা করে থাকে, এই কোরবানি পশুর হাটের জন্য। তাদের অনেকেই পশু পালন ও বিক্রি করে জীবিকা চালায়। একইসঙ্গে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরাও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেন। আবার এটিও সত্য যে, আমাদের শহরে ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে যদি পশুর হাট বসে, সেটি কিন্তু জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য কিছু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বলেছি।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘হাট ইজারা দিয়ে হয়তো কোটি টাকা আয় করা যাবে, কিন্তু টাকার চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তাই আমি ঢাকার বাইরে তুলনামূলক কম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হাট বসানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি। যাতে ব্যাবসায়ীরা পশু বিক্রি করতে পারে, আবার জনস্বাস্থ্যও বিবেচনায় রাখা যায়।’
তিনি বলেন, ‘তেজগাঁও, আফতাবনগর, ভাষানটেক এলাকায় বড় হাট বসে প্রতিবার। সেখান থেকে আমাদের অনেক টাকা আয়ও হতো। কিন্তু এবছর করোনা বিবেচনায় এলাকাবাসীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এসব স্থানে হাট বসতে দেবো না।’
অন্যান্য এলাকার কথা উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘উত্তরা ১০,১১ ও ১২ এই তিনটি সেক্টরে বড় হাট বসতো। গত বছর এই হাটে ইজারা মূল্য পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কিন্তু এবছর এখানে আমরা হাট বসতে দেবো না। উত্তরাবাসীর জন্য উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের বৃন্দাবন এলাকায় বড় হাট বসবে, তারা সেখান থেকে পশু কিনতে পারবেন এবং ওই এলাকায় মানুষের বসবাসও কম। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দাদের জন্য বসিলায় একটা হাট দেওয়া হবে। এছাড়া, হাট থাকবে পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী ও ১০০ ফুট সড়কের সাইদ নগর এলাকা ও কাওলায়। গাবতলীতে আমাদের স্থায়ী পশুর হাট আছে, সেটি থাকবে।’
তবে ঢাকা উত্তরের সব হাটেই কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমি অনুরোধ করবো, যাতে শারীরিকভাবে দুর্বল, অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক মানুষ এবং শিশুরা পশুর হাটে না আসে এবার। ইজারাদারদের বলা থাকবে যাতে পশুর হাটে ন্যূনতম পাঁচ ফুট দূরে দূরে গরু রাখার ব্যবস্থা করেন তারা। হাটে পর্যাপ্ত বেসিন এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে, জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে একটু পর পর মাইকিং থাকতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সব হাটে ম্যাজিস্ট্রেটরা টহলে থাকবেন। ইজারাদারদের সতর্ক থাকতে হবে, নির্দেশনা মেনে চলতে হবে, অন্যথায় ইজারা বাতিল করা হবে বলে জানান ডিএনসিসি মেয়র।
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও ডিএনসিসি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করতে প্রস্তুত আছে।’ তিনি নগরবাসীকে অনুরোধ করে বলেন, ‘আপনারা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দেবেন। কোনও অবস্থাতেই বর্জ্য ড্রেনে ফেলবেন না। ইনশাআল্লাহ, আমরা এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা উত্তরের সব বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হবো।’