আইনটি করার পর সে সময় শোরগোল পড়েছিল শেয়ারবাজারে। আইনটির বিপক্ষে বেশ কিছু পরিচালক উচ্চ আদালতে রিটও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে টিকে গিয়েছিল বিএসইসির সেই আইনটি। ২০১১ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে বিদায় নিয়েছে খায়রুল কমিশন। কিন্তু আইনটি করার ক্ষেত্রে যতটা তৎপর ছিলেন, ততটা তৎপর ছিলেন না আইনটির পরিপালনের ক্ষেত্রে। ফলে আইন অমান্য করে ন্যূনতম শেয়ার না থাকার পরও বছরের পর বছর তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকের পদে রয়েছেন অনেকে।
বিএসইসির পুনর্গঠিত কমিশন এসে সেসব আইন অমান্যকারী পরিচালকদের বিরুদ্ধে নতুন করে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এ জন্য ন্যূনতম শেয়ার ধারণের শর্ত না মানা ২২ কোম্পানির ৬১ পরিচালককে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। ৪৫ দিনের মধ্যে এই ৬১ পরিচালককে ন্যূনতম শেয়ার ধারণের শর্ত পরিপালনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় এসব পরিচালককে পদ অপসারণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন পরিচালক পদে থাকতে হলে এসব পরিচালককে হয় নতুন করে শেয়ার কিনতে হবে নয়তো পদ ছাড়তে হবে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, অনেক বছর ধরে আইন অমান্য করে যাঁরা পরিচালক পদে রয়েছেন তাঁদের বিষয়ে আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই শেয়ারবাজারে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, যে ২২ কোম্পানির পরিচালককে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে বেশির ভাগই বিমা খাতের কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো এশিয়া ইনস্যুরেন্স, বাংলাদেশ জেনারেল ইনস্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্স, দুলামিয়া কটন, ইস্টার্ন ইনস্যুরেন্স, এক্সিম ব্যাংক, ইমাম বাটন, ইনটেক লিমিটেড, কর্ণফুলী ইনস্যুরেন্স, কে অ্যান্ড কিউ, মেঘনা লাইফ ইনস্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইনস্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রভাতী ইনস্যুরেন্স, ইউনাইটেড এয়ার, ফু–ওয়াং সিরামিক, পূরবী জেনারেল ইনস্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড ইনস্যুরেন্স, ওয়াটা কেমিক্যালস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স ও প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স।
২০১১ সালে ন্যূনতম শেয়ার ধারণ–সংক্রান্ত যে আইন করা হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালক পদে থাকতে হলে ওই কোম্পানির ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার থাকা বাধ্যতামূলক। আর উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে সব সময় সম্মিলিতভাবে ওই কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে।