ট্রাম্প বলছিলেন, মহামারীর একটি সমাধান হয়ে যাবে এবং চলতি বছর শেষ হয়ে যাওয়ার অনেক আগেই ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে। ৪ জুলাই স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ দেশব্যাপী ও সর্বোপরি বিশ^ব্যাপী বিজ্ঞানী ও গবেষকদের আমি ধন্যবাদ দিতে চাই যারা খুব দ্রুততার সঙ্গে মানুষের জীবন বাঁচানোর চিকিৎসাসেবা ও পরিশেষে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঐতিহাসিক প্রচেষ্টায় নিয়োজিত। আমাদের জাতির বৈজ্ঞানিক প্রতিভা নিয়ে আমরা অবগত, আশাকরি এ বছর শেষ হওয়ার অনেক আগেই ভ্যাকসিনের একটা সমাধান হয়ে যাবে।’
এমন সময়সীমা নিয়ে হানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কখন ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে, সে ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী আমি করতে পারি না।’ তিনি জানান, ভ্যাকসিনের উন্নয়ন নির্ভর করবে কেবলই তথ্য আর বিজ্ঞানের ওপর।
ভ্যাকসিন একজন মানুষের ইমিউন সিস্টেমকে প্রশিক্ষণ দেয় যেন সেটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে, কাজেই তখন তারা অসুস্থ হবে না।
করোনাভাইরাস চলাচালে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা নিয়ে মন্তব্য করে অনেকবারই সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। এ মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ২৮ লাখেরও বেশি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পশ্চিম ও দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে সংক্রমণের হার অনেক বেড়েছে।
জুন মাসে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ডা. টেড্রোস অ্যাডহানোম গেব্রেইসাস হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, এ বছরের মধ্যে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরি নাও করতে পারেন বিজ্ঞানীরা। তার কথায়, ‘আমাদের ধারণা, এক বছরের মধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যেতে পারে।’ আবার অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের আগে ভ্যাকসিন বাজারে নাও আসতে পারে।
এবিসি নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হান বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি বিজ্ঞানীরা নজিরবিহীন দ্রুততার সঙ্গে ভ্যাকসিন উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’ যদিও সময়সীমা নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাইলেন না। তার ভাষায়, ‘আমেরিকান মানুষদের কাছে আমাদের একটাই প্রতিশ্রুতি, ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা তথ্য ও বিজ্ঞানের ওপরই নির্ভর করব; ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।’
গত শনিবার রাতে ট্রাম্প দৃঢ়তার সঙ্গে বলছিলেন, কভিড-১৯ সংক্রমণের ৯৯ শতাংশের ক্ষেত্রেই কোনো ক্ষতি হয় না। এ ব্যাপারে হান কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘কে সঠিক আর কে ভুল সে ব্যাপারে আমি যাচ্ছি না। তবে হোয়াইট হাউজ ট্যাস্ক ফোর্সের কাছে তথ্য আছে, যা বলছে এটি গুরুতর সমস্যা। মানুষকে এটি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।’
ট্রাম্পের করোনাভাইরাস বিষয়ক অন্যতম উপদেষ্টা হয়েও যখন প্রেসিডেন্টের ভুল শোধরাতে রাজি হলেন না হান, তখন এ ঘটনা ভাইরাস নিয়ে আমেরিকান মানুষদের মধ্যে সংশয়ের জন্ম দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রে শনিবার পর্যন্ত মৃত্যুর হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। তাহলে তো ট্রাম্পের দাবি ভুল প্রমাণিতই হয়। যদিও বিশ^ব্যাপী কভিডে মৃত্যুর হার ধারণার চেয়ে বেশ কমই। দেশেভেগে এটি কমবেশি হয়। মার্চে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, কভিডে মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৪ শতাংশের মতো। এছাড়া বেশিরভাগ সংক্রমিতর হালকা ও মাঝারি উপসর্গ দেখা দেয়, আর ২০ শতাংশ রোগীর অক্সিজেন লাগে।
সূত্র: বিবিসি ও সিএনএন