কিং অব স্পাইস বলা হয় এই মশলাকে। সারা বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৫০-৬০ শতাংশই মেলে ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বতমালা থেকে। এটি হল চিরচেনা গোলমরিচ। সারা বিশ্বে মোট ৮০ রকম প্রকারের গোলমরিচ পাওয়া যায়। জার্নাল অব ক্রিটিকাল রিভিউস ইন ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশনের গবেষণায় প্রকাশ এই মশলায় অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল এবং গ্যাস্ট্রো-প্রোটেক্টিভ ক্ষমতা রয়েছে। জার্নাল অব ইমিউনোটক্সিকোলজি বলছে, এই মশলার অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্যের কথা। কিন্তু কিং অব স্পাইস অর্থাৎ চিরচেনা গোলমরিচ কি সত্যিই কোভিড সংক্রমণ রুখতে সক্ষম?
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের গবেষণা বলছে, গোলমরিচে থাকে পিপেরিন। থাকে উদ্বায়ী তেল, ওলিওরেজিন এবং অ্যালকালয়েড। গোলমরিচের ফ্রি-র্যাডিকাল ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতার কথা সম্প্রতি অন্য একটি গবেষণায় উঠে এসেছে। টিউমারের বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে সেটি, দেখা গিয়েছে এমনই। এ ছাড়াও পিপার নাইগ্রামের অ্যালকালয়েড অর্থাৎ পিপেরিন হজম শক্তি বৃদ্ধিতে এবং স্নায়ুর কাজে সাহায্য করে। এটি সাহায্য করে প্রদাহ নাশ করতেও। কিন্তু ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে পারে গোলমরিচের ব্যবহার, এমন কোনও তথ্য গবেষণায় উঠে আসেনি।
গোলমরিচ বা এ জাতীয় কোনও মশলা রান্নায় ব্যবহার কি করোনা রুখতে পারে? এই প্রসঙ্গে মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, করোনা রুখতে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা নিরন্তর পরিশ্রম করে চলেছেন। প্রতিষেধকের বিষয়টি সংক্রান্ত কোনও কিছুই এখনও মেলেনি নিশ্চিতভাবে। কোনও খনিজ পদার্থ বা কোনও বিশেষ মশলার সঙ্গে করোনা প্রতিরোধের সম্পর্কের কথা জানা যায়নি। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করতে হবে।
আয়ুর্বেদে গোলমরিচের কথা রয়েছে। কণ্ঠস্বর ভাল হয় কাঁচা গোলমরিচ চিবিয়ে খেলে, উল্লেখ রয়েছে এ কথাও। এই প্রসঙ্গে আয়ুর্বেদ চিকিৎসক বাদল জানা বলেন, ‘শরীরের চ্যানেলগুলো পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে গোলমরিচ। শরীরের মাইক্রো ও ম্যাক্রো চ্যানেলগুলি পরিষ্কার রাখে গোলমরিচ। কিন্তু করোনা সংক্রান্ত কোনও কিছু জানা যায়নি।’ অতএব রান্নায় স্বাদ আনতে, কণ্ঠস্বরের সমস্যা হলে কিংবা হজম শক্তি বাড়াতে গোলমরিচ খাওয়া যেতেই পারে। তবে করোনা প্রতিরোধের সঙ্গে গোলমরিচের কোনও সম্পর্ক নেই, নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা।
সূত্র : আনন্দবাজার