এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর ফজলে কবিরকে আরও দুই বছর ওই পদে রাখতে সরকারের আর কোনো বাধা থাকছে না।
অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামালের পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২০’ পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন।
বিলটির বিষয়ে জাতীয় পার্টির ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা আপত্তি জানান। তারা বলেন, কোন একজন ব্যক্তির জন্য এমন আইন করা উচিত নয়।
খসড়া আইনটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, “একজনের জন্য এই আইন করা হচ্ছে। যোগ্য লোককে নিয়োগের পথ বন্ধ করা হচ্ছে। অর্থাৎ অন্য যারা আছেন তাদের অযোগ্য মনে করছি।“
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “গভর্নর পদে বয়স ৬৭ করা হলে এখন সিভিল সার্ভিসের সবাই চাইবে তাদেরও বয়সসীমা বাড়ানো হোক। সরকারের এ বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত।
“আরেকটা কথা, যোগ্য লোক হলেই ভালো গভর্নর হবেন এমন না। একজন গভর্নরের সময়ে রিজার্ভ চুরি হয়েছিল। এই গভর্নর কী সেই টাকা ফেরত এনেছেন? ঋণ খেলাপিদের বিষয়ে তিনি কী পদক্ষেপ নিয়েছেন আমরা জানি না। একজন ব্যক্তির জন্য এই আইন করা হলে তা ঠিক নয়। “
এসব বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, সরকার কোনো বক্তির জন্য নয়। গভর্নর পদের জন্য আইন করছে।
“সংসদ সদস্যরা অনেক যুক্তিসঙ্গত কথা বলছেন। সবচেয়ে বড় যুক্তি বাস্তবতা। সেই বাস্তবতার জায়গা থেকে এই আইন করা হচ্ছে।“
পরে সংশোধনী প্রস্তাব তোলার সময় বিএনপির হারুনুর রশীদ, “আমরা দেখত চাই এই আইন পাস হওয়ার পর নতুন কোন ব্যক্তিকে গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।“
এর জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক শক্তিশালী করতে আইনটি করা প্রয়োজন। কোনো ব্যক্তির জন্য এটা হচ্ছে না। প্রয়োজনের জন্য করা হয়েছে। সামনে কেউ যদি মনে করেন ৭০ করবেন, তা করতে পারেন।“
অর্থমন্ত্রীর পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রীই বুধবার ১৯৭২ সালের ‘দ্যা বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার’ সংশোধন করতে সংসদে বিল তোলেন।
সংসদে কোনো বিল উত্থাপনের পর সাধারণত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠান। তবে এই বিলের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকা যাবে, বিদ্যমান আইনে যা ৬৫ বছর ছিল।