আজ বুধবার (১৫ জুলাই)ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) এর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ আশ্বাস দেন। ভিসিপিয়াবের সভাপতি ও পেগাসাস টেক ভেঞ্চারস (সাবেক ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটাল)এর জেনারেল পার্টনার শামীম আহসানের নেতৃত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দেশের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল,প্রাইভেট ইক্যুটি এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা হয়। টেকসই ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইন্ডাস্ট্রি তৈরিতে প্রয়োজনীয় পলিসি সহায়তার অনুরোধ করে ভিসিপিয়াব। প্রতিনিধিদল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটি বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায় সম্প্রসারণ,উদ্ভাবন, রফতানি এবং স্থানীয় স্টার্টআপ তৈরি করা যা দেশের শেয়ারবাজারে অবদান রাখতে পারে সেসব বিষয়ে সম্ভাব্য সহায়তার বিষয়গুলোতে জোর দেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম সম্ভাবনাময় এই খাতের উন্নয়নে ভিসিপিয়াবের সাথে মিলে পলিসিগত সহায়তার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন,দেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সহজ করা ও স্বচ্ছতা আনতে নিয়মিতভাবে বিএসইসি কাজ করে যাচ্ছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি এন্টারপ্রাইজের জন্য প্রয়োজনীয় পলিসিগত পরিবর্তনগুলো অবশ্যই সম্পন্ন করা হবে।
ভিসিপিয়াব সভাপতি শামীম আহসান পলিসি সহায়তার মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটি খাতের জন্য সহায়ক সুযোগ বৃদ্ধির দাবি করেন,যার মাধ্যমে এই খাত দেশের উদ্ভাবনী স্টার্টআপে বিনিয়োগ করে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পরবে।তিনি উল্লেখ করেন যে,এসব স্টার্টআপ এমন একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করতে পারবে যা ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের জিডিপিতে ২ শতাংশ পর্যন্ত অবদান রাখতে পারবে।
তিনি আরও বলেন,গুগল,ফেসবুকের মতো বিশ্বের সফল কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র তাদের প্রতিষ্ঠাতাদের জন্য সফল হয়নি,এক্ষেত্রে ঐসব প্রতিষ্ঠান স্টার্টআপ থাকাকালীন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান যেমন সিকুইয়া ক্যাপিটাল, অ্যাক্সেল পার্টনারস, গ্রেলক পার্টনারসহসহ অন্যান্যদের ভূমিকা রয়েছে।একইভাবে,বাংলাদেশের সেরা কোম্পানিগুলো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটি ফান্ডের বিনিয়োগের মাধ্যমে সফল হবে।
বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসউদ্দিন আহমেদ জানান,তারা বাংলাদেশে স্টার্টআপ ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সকল ধরণের সহায়তা করবেন।
ভিসিপিয়াব সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইক্যুইটি খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পলিসি পরিবর্তনের বিষয়গুলো নিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পেরেছি আমাদের বর্তমান পলিসিগুলো বিশ্বের অন্যান্য দেশের পলিসির তুলনায় অনেক পিছনে পড়ে আছে। ভিসিপিয়াবের পক্ষ থেকে আমরা সেগুলো পরিবর্তন করা এবং সহয়োপযোগি পলিসি তৈরির প্রস্তাবনা দিচ্ছি যা স্থানীয় স্টার্টআপ তৈরিতে এই খাতকে সহায়তা করবে।
আইডিএলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভিসিপিয়াব সদস্য আরিফ খান বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে বাড়ানোর জন্য এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে এই খাতটিকে আকর্ষনীয় করে তুলতে পলিসি পরিবর্তনের বিষয়গুলো আলোকপাত করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ পরিবেশ সহায়ক করতে হবে, বিনিয়োগ ও বিনিয়গ থেকে প্রস্থান কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এতে দীর্ঘস্থায়ী বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে।
ভিসিপিয়াব পরিচালক ও মসলিন ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালিউল মারুফ মতিন এই খাতকে টেকসই করতে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলেন। তিনি বলেন, বড় ধরণের কিছু নীতিমালার অভাব এবং যথাযথভাবে বিনিয়োগ করতে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। ফান্ড ম্যানেজারদের জন্য এসব নীতিমালা আরও বিনিয়োগবান্ধব করা জরুরী।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিডি ভেঞ্চার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক-উল-আজম, সিফ বাংলাদেশ ভেঞ্চারস এলএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ মাহমুদ, অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল অ্যাসেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও খন্দকার আসাদুল ইসলাম, লংকা বাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম আলী, ইমপ্রেস ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মীর সাজেদ-উল-বাশার, অ্যাথেনা ভেঞ্চার অ্যান্ড ইক্যুইটি লিমিটেডের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা মাহাদী হাসান ও বাংলাদেশে ভেঞ্চার লিমিটেডের ইনভেস্টমেন্ট অ্যাসোসিয়েট আনোয়ার জাহিদ।
ভিসিপিয়াব ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি খাতকে শক্তিশালী করা এবং এই খাত সংশ্লিষ্টদের আরও দৃশ্যমান করে আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ ও প্রতিযোগিতায় প্রভাবশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে কাজ করছে। স্থানীয় সদস্য ছাড়াও ভিসিপিয়াব অন্যান্য স্থানীয় ও বিদেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি এবং বিদেশি সংগঠনগুলোর সাথে কাজ করছে।