সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত মার্চ থেকে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর স্থবির হতে শুরু করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এখনো গতিহারা অর্থনীতি। এ পরিস্থিতিতে মানুষকে সঞ্চয় করার চাইতে বরং সঞ্চয় তুলে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে। এর ফলে সামনের মাসগুলোতে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের চাইতে তুলে নেওয়ার পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এবং অর্থনীতিতে প্রত্যাশিত গতি না আসলে আগামী দিনে সঞ্চয়পত্র থেকে টাকা তুলে নেওয়ার হার আরো বাড়বে।
সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের (২০১৯-২০) মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নিলেও বিক্রি কমতে থাকায় পরবর্তীকালে তা কমিয়ে ১১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা ধরা হয়। গত জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে মোট ৫৭ হাজার ৮০৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির বিপরীতে মূল পরিশোধ হয়েছে ৪৬ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রি হিসেবে গণ্য হয়। সেই হিসেবে গত অর্থবছরের ১১ মাসে নিট বিক্রির পরিমাণ ১১ হাজার ১১ কোটি টাকা। কিন্তু আগের অর্থবছরের (২০১৮-১৯) একই সময়ে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা এবং নিট বিক্রি ছিল ৪৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত (২০১৯-২০) অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৭৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এদিকে নতুন অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
একক মাস হিসেবে চলতি বছরের মে মাসে মোট ৩ হাজার ২২৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মূল ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ২ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকার। মাসটিতে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ৪৩০ কোটি টাকা। সুতরাং খাতটিতে বিনিয়োগের চেয়ে সঞ্চয় তুলে নেওয়ার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।
বর্তমানে পরিবার সঞ্চয়পত্রে একজন ব্যক্তি একক নামে সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকা ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে একক নামে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা, যৌথ নামে সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যায়।