বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সরকারি বাসভবন গণভবনে চারা লাগিয়ে দেশব্যাপী এক কোটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ সময় বলেন, ‘আজ আমি লাগিয়েছি একটা চালতা গাছ, তেঁতুল গাছ, আর একটা হচ্ছে ছাতিয়ান গাছ। ছাতিয়ান গাছটা খুব বড় হয়। এর কাণ্ড খুব মোটা হয় এবং কাঠ হিসেবে খুব ভালো। সেজন্য ওটা লাগানো হয়েছে। আর তেঁতুলের কথা শুনলেই জিভে পানি আসে। ছোটবেলার কথা মনে হয়। তবে এই বৃদ্ধ বয়সে আসে না। তেঁতুলের শক্তি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের দেশ থেকে তেঁতুলের জাতটা আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তবে এটার চাহিদা আছে। আর ফুচকা-চটপটি তো সবার খেতে ভালো লাগে। সেজন্য তেঁতুল সব সময় দরকার। সেজন্য আমি তেঁতুল গাছের ওপর একটু জোর দিয়েছি। আর চালতাটাও। চালতার পাতাগুলো যেমন সুন্দর দেখতে, ফুল আরও সুন্দর। চালতার আবার অনেক গুণ রয়েছে। ডালে চালতা দিয়ে খেতে তো এমনি মজা লাগে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশটা রক্ষা হওয়া দরকার। পাশাপাশি আমাদের দেশের মানুষের পুষ্টির দরকার। কাজেই আমরা তাদের খাদ্য এবং অর্থনৈতিক সচ্ছলতার কথা চিন্তা করেই কিন্তু বৃক্ষরোপণ করি। আমি নির্দেশনা দিয়েছি শুরু থেকেই যে তিনটা গাছ লাগাতে হবে। একটা ফলের গাছ। একটা কাঠের জন্য, যেটা আর্থিক সচ্ছলতা আনবে। আরেকটা ভেষজ গাছ। অর্থাৎ যে গাছ দিয়ে নানা ধরনের ওষুধ সৃষ্টি হয়, সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এই ধরনের গাছ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবাইকে আহ্বান করবো, যে যেখানে আছেন, আপনার যতটুকু জায়গা আছে, একটা গাছ লাগান। যারা শহরে থাকেন ছাদে বা বারান্দায় একটা টবে গাছ লাগান। যেভাবেই হোক একটু গাছ লাগালে ভালো লাগবে। মনটাও ভালো থাকবে। কিছুটা আপনার নিজের সচ্ছলতা আসবে। নিজের হাতে লাগানো একটা গাছের একটা কাঁচামরিচ খেলেও কিন্তু ভালো লাগে। কাজেই সেইভাবে আমি আহ্বান করবো সবাইকে। আসুন আমরা সবাই মিলে গাছ লাগাই। আমাদের দেশটা একটা বদ্বীপ, এই দেশটাকে আমরা রক্ষা করি এবং দেশটাকে উন্নত করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বা তার বেশি সময় পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে বনায়ন, সবুজ বেষ্টনী যাতে সৃষ্টি হয় সেদিকে লক্ষ রেখে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে বৃক্ষরোপণ করে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। কাজেই তার স্মরণে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা এই পদক্ষেপ প্রতিবছরই নিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশে বনায়ন সৃষ্টি। আমি যখন ৯৬ সালে সরকার গঠন করি তখন মাত্র সাত ভাগ আমাদের বনায়ন ছিল। আজ প্রায় ১৭ ভাগের ওপরে আমরা করতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য ২৫ ভাগ বনায়ন আমরা সারা বাংলাদেশে করবো। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সেই চুরাশি সালে আমরা বনায়নের এ কাজ শুরু করি। ৮৪ থেকে শুরু করে আমরা প্রতিবছর পহেলা আষাঢ় সমগ্র বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ করি। আমাদের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের ওপরে দায়িত্ব থাকে। কৃষক লীগ সমগ্র বাংলাদেশে এই উদ্যোগটা নেয়। আমাদের সব সহযোগী সংগঠন মিলে আমরা বৃক্ষরোপণ করি।’