ভারতীয় এক সূত্র জানায়, এটি পরীক্ষামূলক চলাচল। এই অগ্রগতি খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ ১৯৬৫ সালের পর এই প্রথম ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট হিসেবে বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর এই ট্রানজিট বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশই কয়েক বছর ধরে এই সংযোগ পুনরায় চালুর চেষ্টা করছিল।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের বন্দর হয়ে ভারতীয় কার্গোর ট্রানজিট ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছে দিল্লি।
কলকাতা বন্দর থেকে ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজটির যাত্রা শুরুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া। তিনি বলেন, ‘এই রুটটি বাংলাদেশ হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করার একটি সংক্ষিপ্ত পথ সৃষ্টি করবে।' তিনি জানান, এর মধ্যদিয়ে ইন্দো-বাংলাদেশের নৌপথে সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা হলো।
এক সূত্র জানায়, ট্রানজিটের অনুমতি দেওয়া প্রতিবেশী দেশের জন্য সব সময় স্পর্শকাতর ইস্যু। কারণ ভারতবিরোধী অংশ সর্বদা এমন উদ্যোগকে ভেস্তে দিতে চেয়েছে। এছাড়া, ভারতপন্থী বলে শেখ হাসিনার সমালোচনাও হয়। ফলে তার সরকার ট্রানজিটের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবশ্যই স্বাগত জানানোর মতো উদ্যোগ।
২০১৫ সালে উভয় দেশে নৌপথে পণ্য পরিবহনের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে আরেকটি চুক্তিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে সম্মত হয় উভয় দেশ।
পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন শুরু হওয়ার ফলে বাংলাদেশ হয়ে নৌ, রেল, সড়ক ও একাধিক পথে আটটি রুটে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পাঠাতে পারবে ভারত। বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু করা ভারতীয় মালবাহী জাহাজে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ও আসামের করিমগঞ্জের জন্য স্টিলের বার রয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, পরিকল্পনা অনুসারে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার পর সেগুলো বাংলাদেশি ট্রাকে করে আগরতলা নিয়ে যাওয়া হবে।
সূত্র জানিয়েছে, বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতীয় নৌযানকে চলমান দর অনুসারে ফি প্রদান করতে হবে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই অগ্রগতিকে উভয় দেশের জন্য ‘উইন-উইন’ পরিস্থিতি বলে মনে করছেন। ভারতীয় এক সূত্র মতে, ‘এতে করে উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের ব্যয় উল্লেখযোগ্য কমে আসবে, যা আমাদের সুবিধা দেবে। বাংলাদেশও সুবিধা পাবে কারণ লজিস্টিকস খাত, সরবরাহ চেইন ও বাণিজ্যিক সেবার প্রচারণায় বিনিয়োগের ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে’।