ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, শিগগির পরীক্ষামূলক এই সেবা কার্যক্রম শুরু হবে। এতে নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে সড়কে কমবে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ। অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করতে পারলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার প্রবণতা কমবে। নগরে যানজট কমানোয় হবে সহায়ক।
ডিএনসিসির এমন উদ্যোগ স্বাগত জানিয়েছেন ঢাকা উত্তরের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। তারা জানান, সাধারণত ধনী পরিবারের শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত গাড়িতে স্কুলে যাতায়াত করে। এটা মধ্যবিত্ত ও নিন্মআয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সব স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলবাস চালু করা গেলে যানজট কিছুটা কমবে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলও সাশ্রয় হবে।
ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগ সূত্র জানায়, নগরের যানজট নিরসন ছিল মেয়র আতিকুল ইসলামে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই যানজট নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন করে স্কুলবাস চালু করা অন্যতম। এটি চালু হলে কোনো শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে স্কুলে যেতে পারবে না।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনে স্কুলবাস সার্ভিস প্রবর্তন সংক্রান্ত প্রাথমিক কর্মকৌশল নির্ধারণ’ শীর্ষক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গুলশানের চিটাগাং গ্রামার স্কুল, স্কলাস্টিকা স্কুল, স্যার জন উইলসন স্কুল এবং বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটোরিয়ালের প্রধান ও অভিভাবক প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুলবাস চালু করার বিষয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দেন।
এসময় ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্কুলবাসে নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি বাসে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমে ট্র্যাকিং করা যাবে। কখন বাসে উঠলো, বাস থেকে কখন নামলো, স্কুলে কখন প্রবেশ করলো— সবই অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই অভিভাবকেরা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
এছাড়া নিয়োগ দেওয়ার আগে বাসচালক ও কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জরুরি প্রয়োজনের জন্য একটি হটলাইন নম্বর থাকবে, যেখানে অভিভাবকেরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের বাসার ঠিকানা অনুযায়ী বাসের রুট নির্ধারণ করা হবে।
ডিএনসিসির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে চিটাগাং গ্রামার স্কুলের অধ্যক্ষ আছিয়া আলম চৌধুরী বলেন, একজন শিক্ষার্থী যেসময় স্কুলবাসে উঠবে, ওই সময় থেকেই শিক্ষার্থীর উপস্থিতি গণ্য করা হবে। বাস দেরি করলেও কোনো শিক্ষার্থীর স্কুলে প্রবেশে সমস্যা হবে না। এই সেবাটি চালু হলে যানজট ব্যাপক হারে কমে যাবে। ফলে দূষণ ও কার্বন নিঃসরণও কমবে। তাই আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এসব বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, স্কুলবাস চালু হলে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে স্কুলে আসা যাবে না। স্কুলে যাতায়াতের জন্য ঢাকা উত্তর সিটির ব্যবস্থাপনায় স্কুলবাস চালু করা হবে। এখন পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুলবাস সেবা চালু হবে।
মেয়র আরও বলেন, অনেক স্কুলে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এতে অসংখ্য গাড়ি রাস্তায় চলাচল করে। স্কুলবাস চালু হলে প্রাইভেট গাড়ির ব্যবহার অনেক কমে যাবে। ছেলেমেয়েরা স্কুলবাসে একসঙ্গে যাওয়া-আসা করলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে, সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় হবে।