গত ছয় মাসে বিশ্বজুড়ে চিনি, মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্য খানিকটা কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে ধান-গম-ভুট্টার মতো খাদ্যশস্যের দাম। তবে সার্বিক বিচারে ধীরে ধীরে খাদ্যপণ্যের দাম সহনীয় মাত্রায় পৌঁছাচ্ছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (ফাও) বৈশ্বিক খাদ্যপণ্য মূল্যসূচকের সেপ্টেম্বর মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে এই তথ্য।
গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধার পর বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছিল খাদ্যশস্য, ভোজ্যতেল, চিনি, মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাতপণ্যসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম।
খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষণে ১৯৬২ সাল থেকে ব্যবহার করে আসছে ফাও। যুদ্ধ শুরুর পর চলতি বছরের মার্চ মাসে সেই সূচক ঠেকেছিল রেকর্ড ১৫৯ দশমিক ৭ পয়েন্টে; এর অর্থ খাদ্যপণ্যের বাজারমূল্য দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। ফাও’র পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়েছিল, গত ৬০ বছরের ইতিহাসে এত অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দামের এই পরিমাণ উল্লম্ফণ ঘটেনি।
তার পরের মাস থেকেই অবশ্য ধীরে ধীরে কমতে থাকে দাম। ফাও’র বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচকের অবস্থান অবস্থান ছিল ১৩৬ দশমিক ৩ পয়েন্টে। তার আগের মাস আগস্টে সূচকের অবস্থান ছিল ১৩৭ দশমিক ৯ পয়েন্টে। অর্থাৎ ধীরে ধীরে বিশ্বে কমে আসছে খাদ্যপণ্যের দাম।
সূচক বিশ্লেষণ করে আরও জানা গেছে, শতকরা হিসেবে গত ছয় মাসে বিশ্বে ভোজ্য তেলের দাম কমেছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ; আর চিনি, মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মূল্য ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে চাল ও গমের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ করে এবং ভুট্টার দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খরা, বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে উৎপাদন কম হওয়াই এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ।
ফাও থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বর্তমান বৈশ্বিক খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি সম্পর্কে বলা হয়, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের দাম বেড়েছে, কমেছে অন্যান্য খাদ্যপণ্যের দাম। যদি খাদ্যশস্যের দাম স্থিতিশীল থাকত, বাজারে আরও স্বস্তিভাব বজায় থাকত।’