আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) সকালে বিএসইসি এ সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু করেছে।জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং লিমিটেড এবং এর ইস্যু ম্যানেজার আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ও জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ঠ সুত্র জানিয়েছে, কোম্পানিটিতে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইসিবির ৮১ কোটি টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ার রয়েছে, যা প্রিমিয়ামে কেনা। আর এই শেয়ার কেনা-বেচার ক্ষেত্রে কোম্পানি ও আইসিবির মধ্যে ১১ শতাংশ রিটার্নের নিশ্চয়তা সংক্রান্ত একটি চুক্তি রয়েছে।
আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান (Subsidiary Company) আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিল। সিকিউরিটিজ আইন অনুসারে, ইস্যু ম্যানেজার কোনোভাবেই ইস্যুয়ার কোম্পানির শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। অন্যদিকে গ্যারান্টেড রিটার্নের বিষয়টিও সিকিউরিটিজ আইনে সমর্থন করে না।
বিএসইসি জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং লিমিটেডের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখেছে, কোম্পানিটি একই মালিকদের অন্য কোম্পানিকে ১০৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এই টাকা ফেরত নিলে কোম্পানিটিকে আইপিওর মাধ্যমে ৭৫ কোটি টাকা উত্তোলনের প্রয়োজনই পড়ে না।
এছাড়া কোম্পানিটি মুনাফা ও শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বাড়িয়ে দেখিয়ে কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য ভাল এমনটি তুলে ধরে বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছে বলে মনে করছে বিএসইসি। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কোম্পানিটি সর্বশেষ হিসাববছরে পণ্য বিক্রি অনেক বেশি দেখিয়েছে, যার বড় অংশই বাকীতে বিক্রি করা হয়েছে।
জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং লিমিটেডের আয়ের একটি বড় অংশ (৪৪%) আসে একই গ্রুপের অন্য কোম্পানিগুলোর কাছে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে। এর ফলে কয়েক ধরনের ঝুঁকি থাকে। একদিকে কোম্পানির মালিকরা চাইলেই কৃত্রিমভাবে বিক্রি বাড়িয়ে-কমিয়ে দেখিয়ে মুনাফার উত্থান-পতনের মাধ্যমে শেয়ার মূল্য কারসাজি করতে পারবে। অন্যদিকে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কাছে কম দামে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদেরকে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করে নিজেরা লাভবান হতে পারেন।
এছাড়াও কোম্পানিটি অবচয় কম দেখিয়ে মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে বলে বিএসইসির পর্যবেক্ষণে উঠে আসে।
উল্লেখ, জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং লিমিটেড বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করার জন্য বিএসইসিতে আবেদন করেছিল। এই পদ্ধতির অংশ হিসেবে গত বছরের ২০ অক্টোবর কোম্পানিটি এক রোড শো করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করার জন্য নিলাম (Bidding) এর জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করেছিল। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করার পর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করার জন্য নতুন করে আবেদন করতে হতো। বিএসইসি নিলামের আবেদনটি-ই বাতিল করে দিয়েছে। তাই পুরো প্রক্রিয়াই বাতিল হয়ে গেছে।