আ.লীগ দেশের স্থিতিশীলতা এনেছে: প্রধানমন্ত্রী

আ.লীগ দেশের স্থিতিশীলতা এনেছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, মেধাবি ছাত্রদের হাতে অর্থ, অস্ত্র, মাদক তুলে দিয়ে বিপথে ঠেলে দিয়েছে। ’৭৫ এর পর এই ছিল বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর কেবল তাঁরা স্থিতিশীলতা আনতে পেরেছিলেন। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস ও বর্বরতার সেই দিন যেন ফিরে না আসে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।





রোববার দুপুরে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।





‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামাতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খণ্ডচিত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার শুধু একটাই আহ্বান থাকবে দেশবাসীর কাছে রাজনীতি করতে চাইলে সুষ্ঠু রাজনীতি করুক, আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আমার এই সাধারণ মানুষের গায়ে কেউ হাত দিলে তাদের রক্ষা নাই।





তিনি বলেন, আমি শুধু দেশবাসীকে এটুকুই বলবো ওই দুঃসময়ের কথা যেন কেউ ভুলে না যায়।





ভবিষ্যতে অগ্নিসন্ত্রাসের মতো ঘটনা যাতে না ঘটে এ জন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে কেউ ঘটাতে না পারে। দল-মত যাই হোক, প্রত্যকটা মানুষের স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার আছে। সেই অধিকার সংরক্ষণ করাটাই আমাদের দায়িত্ব। আমরা সেটাই চেষ্টা করে যাচ্ছি।





শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের আগস্টে ঘাতকের দল যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা এ দেশের মানুষ হত্যার যাত্রা শুরু করে। আমার মনে হয় যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে অত্যচার করেছে, তার পুনরাবৃত্তি দেখতে পাচ্ছি। ৭৫ সালের পর আমাদের সেনাবাহিনীতে ১৯ থেকে ২০টা ক্যু হয়েছে। সেনা অফিসার, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের পরিবার লাশও পায়নি; কারণও জানতে পারেনি; বিচারও হয়নি। ফাঁসি দিয়ে, গুলি করে অথবা ফায়ারিং স্কোয়াডে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা দিনের পর দিন চলেছে এ দেশে।





তিনি আরও বলেন, অনেক সংগ্রামের পর যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হলাম। তখনই সরকার উৎখাতের নামে অগ্নিসন্ত্রাস শুরু হলো ২০০১ সালে, সেটা আবার ২০১৩, ’১৪ ও ’১৫-তে চলল। কীভাবে মানুষ পারে? গাড়িতে আগুন ধরিয়ে জীবন্ত মানুষকে হত্যা করতে। কীভাবে পারে মানুষের ক্ষতি করতে, এটাই নাকি আন্দোলন? এই আন্দোলন তো কখনো দেখিনি। আন্দোলন তো স্কুলজীবন থেকেই আমরা করেছি। সেই আইয়ুব খানের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি, ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি। কই আমরা তো স্বপ্নেও এ কথা ভাবিনি যে, সাধারণ মানুষকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে আন্দোলন করা হবে।





শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ঘোষণা দিল অবরোধ এবং হরতাল। কিন্তু কাজ হলো কী, মানুষকে হত্যা করা। আজকে এখানে যারা উপস্থিত, এটা তো খুব সামান্য কয়েকজন। ২০১৩ সালেই তারা ৩ হাজার ৬০০ মানুষকে পেট্রোল বোমা মেরে আহত করেছে। ২০১৪ ও ’১৫ তেও করেছে। একইভাবে গাড়ি পুড়িয়ে মানুষের জীবন-জীবিকা শেষ করে দিয়েছিল। এটা কী রকম আন্দোলন। সেটাও জানি না।





২০১৩ সালে আন্দোলনের নাম বিএনপি মানুষ খুন করা শুরু করেছিল বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অন্তত ৫০০ জন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে এবং সাড়ে তিন হাজার মানুষ আহত হয়েছিল বলে জানান তিনি।





অগ্নিসন্ত্রাসে নিহতদের স্বজন ও আহতদের বক্তব্য দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের কান্না, যন্ত্রণা ও বেদনা আজ দেখেছেন। আমি স্বজনহারা, একদিনে বাবা, মা, ভাই সব হারিয়েছিলাম। এদের কষ্টটা আমি উপলব্ধি করতে পারি।





প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা যতটুকু পারি করেছি। কিন্তু যে মানুষগুলো আপনজন হারিয়েছে, তাদের ব্যথা, কষ্ট ও বেদনা তো দূর করা সম্ভব না। আগুনে পুড়ে অনেকের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।





দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই দুঃসময়ের কথা যেন কেউ ভুলে না যায়।





অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। তারপর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিএনপির অগ্নি-সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা নিজে শোনেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে অনেকে কেঁদে ফেলেন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রীও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।


আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ৭ প্রস্তাব
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা
এনসিপিকে শাপলার বিকল্প প্রতীক নিতে চিঠি দেবে ইসি
শর্ত পূরণ করেছে এনসিপিসহ দুটি দল: ইসি
স্ত্রীসহ সাবেক এমপি আলী আজমের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
ফ্যাসিস্ট শক্তি মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ: আইজিপি
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ
দূষিত বায়ুর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়
আজ বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী কোনো সহিংসতা নেই: প্রধান উপদেষ্টা