সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ ২০২২ সালের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি’২২-সেপ্টেম্বর’২২) ব্র্যাক ব্যাংক ৩৮০ কোটি টাকা কর-পরবর্তী আয় করেছে, যা ২০২১ সালের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। আর এককভাবে ব্যাংকটির আয় হয়েছে ৩৯২ কোটি টাকা।
গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় প্রান্তিকের আার্থিক ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ বিশ্লেষক, পোর্টফোলিও ম্যানেজার ও পুজিঁবাজার বিশেষজ্ঞরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংক এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) অ্যান্ড সিএফও এম. মাসুদ রানা, ডিএমডি অ্যান্ড সিওও মো: সাব্বির হোসেন, ডিএমডি অ্যান্ড হেড অব কর্পোরেট ব্যাংকিং তারেক রেফাত উল্লাহ খান, ডিএমডি অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন, ডিএমডি অ্যান্ড হেড অব ট্রেজারি অ্যান্ড এফআই মো: শাহীন ইকবাল সিএফএ, হেড অব অলটারনেট ব্যাংকিং চ্যানেলস নাজমুর রহিম, হেড অব ব্রাঞ্চেস শেখ মোহাম্মদ আশফাক, হেড অব ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট আহমেদ রশীদ জয় এবং রিটেইল ব্যাংকিংয়ের হেড অব ডিপোজিটস অ্যান্ড এনএফবি সারাহ আনাম ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল, অর্জন, অগ্রগামী অবস্থান ও ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কৌশল তুলে ধরেন।
ব্র্যাক ব্যাংক জানায়, নয় মাসে আমানতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪,৬২১ কোটি টাকা (২০% অ্যানুয়ালাইজড) এবং লোন ও অ্যাডভান্সেস বৃদ্ধি পেয়েছে ৭,৩৮০ কোটি টাকা (৩১% অ্যানুয়ালাইজড)।
খেলাপি ঋণের হার (এনপিএল) দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে, যা কার্যকরভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। কোভিডের কারণে ঋণ পরিশোধ স্থগিতকরণ সত্ত্বেও খেলাপি ঋণের হার বাড়েনি। এছাড়াও সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলায় ব্যাংক ১১৪ শতাংশ এনপিএল কভারেজ বজায় রেখেছে বলে জানিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় মোট আয় (রেভিনিউ) সামষ্টিকভাবে ১৫ শতাংশ এবং এককভাবে (সলো) ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মানবসম্পদ, প্রযুক্তি এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগের দীর্ঘমেয়াদী কৌশল অব্যাহত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। বছর-বছর ভিত্তিতে মোট পরিচালনা ব্যয় ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানত নিয়ন্ত্রক সংস্থার ক্ষতিপূরণ ও সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক ১০.৫৭ টাকা থেকে বেড়ে ১.৭৪ টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০২২ সালে অধিক আমানত সংগ্রহ ও অতিরিক্ত তহবিল ঋণ নেওয়ায় এটি হয়েছে।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সামষ্টিকভাবে শেয়ার প্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৫৩ পয়সায়, যা ২০২১ সালে ছিল ২ টাকা ৬৭ পয়সা।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নিট অ্যাসেটস মূল্য (এনএভি) ৩৮ টাকা ২১ পয়সা থেকে বেড়ে ৩৯ টাকা ৬৬ পয়সা হয়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করে ব্র্যাক ব্যাংক-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন: “অন্যান্য অনেক উন্নয়নশীল দেশের সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতিও গত নয় মাস ধরে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। এই কঠিন সময়েও, আমরা আমাদের ব্যবসায়িক মডেলের দৃঢ়তা যাচাই করতে পেরে আনন্দিত। আমাদের বিস্তৃত ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক, গ্রাহক কেন্দ্রিক ডিজিটাল সেবা ও উদ্ভাবনী প্রোডাক্ট লক্ষ্যণীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে সাহায্য করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই কঠিন সময়ে ব্যাংকের প্রতিভাবান সহকর্মীদের তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন, পরিচালনা পর্ষদকে তাদের দিকনির্দেশনা প্রদান এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বপ্রণোদিত নীতিগত সহায়তা প্রদানের জন্য আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”