অনুশীলনে না থাকায় মেসি-ডি মারিয়াকে নিয়ে নতুন গুঞ্জন

অনুশীলনে না থাকায় মেসি-ডি মারিয়াকে নিয়ে নতুন গুঞ্জন

বিশ্বকাপের আগে টানা ক্লাব ফুটবল খেলে ক্লান্ত বিশ্বসেরা ফুটবলাররা। অনেকেই পড়ছেন ইনজুরির কবলে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন সেরা তারকা ছিটকে গেছেন বিশ্বকাপ থেকে। ইনজুরি শঙ্কা ছিল আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, পাওলো দিবালাসেহ বেশ কয়েকজনকে নামকরা ফুটবলারকে নিয়ে।





এরই মধ্যে আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে পাওলো দিবালাকে খেলাতে পারেননি কোচ লিওনেল স্কালোনি। এরপর ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন দুই তারকা নিকো গঞ্জালেজ এবং জোয়াকিন কোরেয়া। এবার শঙ্কা বাড়লো খোদ মেসি এবং ডি মারিয়াকে নিয়েও।





শুক্রবার ছিল, কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর মাঠে আর্জেন্টাইন শিবিরের অফিসিয়াল অনুশীলন। কিন্তু এই অনুশীলন পর্বে যোগ দেননি লিওনেল মেসি এবং অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। এই দু’জন অনুশীলনে যোগ না দেয়াতেই শঙ্কা এবং গুঞ্জন দুটোই বেড়েছে। তৈরি হয়েছে রহস্য।





বৃহস্পতিবার বিকেলেও অনুশীলন করেননি মেসি। কিন্তু সতীর্থদের সঙ্গে মাঠে এসে কয়েক পাক হেঁটেছিলেন। শুক্রবার কিন্তু মাঠেই দেখা যায়নি আর্জেন্টাইন সুপারস্টারদের।





বিশ্বকাপের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দোহায় শুক্রবারই স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ছিল আর্জেন্টিনা দলের প্রথম অনুশীলন। বিকেল ৪টা থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দেন স্কালোনির সহকারীরা। মাঠের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট বল সাজিয়ে রাখেন তারা। ভিড় করতে শুরু করেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।





আর্জেন্টিনার সাংবাদিকরা মেসি…মেসি…গান গাইছিলেন। রীতিমতো উৎসবের আবহ। পাঁচটা পনেরো নাগাদ স্কালোনির সহকারীরা মাঠের মধ্যে ঢুকেই চিন্তিত মুখে বেরিয়ে গেলেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই শুরু হল পানি দেওয়া।





আর্জেন্টিনা টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য বলছিলেন, ‘এই শক্ত মাঠে অনুশীলন করলে ফুটবলারদের চোট লাগার শঙ্কা রয়েছে। তাই পানি দেওয়া হচ্ছে, যাতে মাটিটা একটু নরম হয়। মেসিরা টানা ম্যাচ খেলে ক্লান্ত। তাদের সুরক্ষার কথা ভেবেই পানি ছিটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।’





৬টা বাজতে মিনিট দশেক আগে স্কালোনি মাঠে নামলেন। পিছনে পিছনে পাওলো দিবালারা। মেসি-ভক্ত বছর সাতেকের কার্লাকে নিয়ে মাঠে এসেছিলেন কাতারে কর্মরত আর্জেন্টিনা দূতাবাসের এক কর্মী। মেয়েকে তিনি বলছিলেন, ‘ওই দেখো, আর্জেন্টিনার কোচ মাঠে। এবার আসবেন মেসি।’





কিন্তু যার জন্য এত আয়োজন, তিনিই এলেন না শেষ পর্যন্ত। ছোট্ট কার্লার মুখ ভার। পকেট থেকে চকোলেট বের করে মেয়ের মনের দুঃখ কমানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন বাবা। তার মুখেও মেসিকে দেখতে না পাওয়ার হতাশা। তবুও মেয়েকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন, ‘মেসি নিশ্চয়ই নামবেন। হয়তো এখনও তৈরি হচ্ছেন। এই কারণেই দেরি হচ্ছে।’





অপেক্ষাই সার, মেসি এলেন না। ছোট্ট কার্লার দু’চোখ ছলছল করে উঠল। শেষ পর্যন্ত মেয়েকে কোলে নিয়ে বেরিয়েই গেলেন বাবা। এমনই মনের অবস্থা নিরাপত্তারক্ষী উসমানের। আর্জেন্টিনা দল যে মাঠে অনুশীলন করছে, তারই প্রবেশদ্বারে গত দু’দিন ধরে কর্মরত বছর বাইশের উসমান।





চব্বিশ ঘণ্টা আগেই মেসিকে দেখেছিলেন একদম সামনে থেকে। কিংবদন্তিকে দেখে এতটাই বিস্মিত হয়ে পড়েছিলেন যে, ছবি তুলতেই ভুলে গিয়েছিলেন। উসমান বলছিলেন, ‘মেসিকে এত সামনে দেখে কেমন যেন ঘোর লেগে গিয়েছিল আমার। মনেই আসেনি সেলফি তোলার কথা। পরে খুব আফসোস হচ্ছিল। আমি ঠিক করেই রেখেছিলাম, আজ দেখা হলে এই সুযোগ আর হাতছাড়া করবো না। মেসির কাছে একটা জার্সিও চাইব। ভাবিনি যে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক অনুশীলনই করবেন না।’





প্রশ্ন উঠছে মেসি, ডি মারিয়া কেন অনুশীলনে এলেন না? ছিলেন না লিসান্দ্রো মার্টিনেজও। কোথায় চোট দুই তারকার? ২২ নভেম্বর সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে কি আদৌ খেলতে পারবেন তারা?





আর্জেন্টিনার টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর রহস্য আরও বেড়ে গেছে। একজন বললেন, ‘মেসির কোনও সমস্যা নেই। ও সম্পূর্ণ সুস্থ। ক্লান্ত বলে বিশ্রাম নিচ্ছেন।’ কয়েক মিনিট পরে আর একজনকে একই প্রশ্ন করায় তিনি বললেন, ‘মেসি অনুশীলন করছেন তো। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমে। শনিবার থেকে হয়তো মাঠে নামবেন।’





ডি মারিয়া ও লিসান্দ্রোর কী সমস্যা? হঠাৎই ব্যস্ততা বেড়ে গেল আর্জেন্টিনা টিম ম্যানেজমেন্টের সেই সদস্যের। বললেন, ‘সব ঠিক আছে। আমাদের দলে কোনো সমস্যা নেই। এখন একটু ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে।’





আবুধাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরই দল থেকে বাদ দিতে হয়েছে নিকোলাস গঞ্জালেস ও জোয়াকিন কোরেয়াকে। তাদের শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য দ্রুত অ্যাঞ্জেল কোরেয়া ও থিয়াগো আলমাদাকে দলে ডেকেছেন স্কালোনি। মেসি যদি সত্যিই চোটের কারণে মাঠে না নামতে পারেন, তার অভাব কিভাবে পূরণ করবেন আর্জেন্টিনা কোচ?





দুশ্চিন্তার বড় কারণ হচ্ছে, চোটের কারণে পিএসজির হয়ে শেষ দুটি ম্যাচে মাঠেই নামেননি লিওনেল মেসি। চোট যাতে না বাড়ে, সে কারণেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাঠের বাইরে রাখা হয়েছিল তাকে। তখনই সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল, মেসির চোটের কী অবস্থা? বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন তো তিনি? এবার শুক্রবার যখন অনুশীলনেই এলেন না, তখন বিষয়টা চিন্তার বৈ কি!





শুক্রবার সন্ধ্যায় কোচ স্কালোনিকেও স্বস্তিতে দেখা যায়নি। মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, মনের মধ্যে যেন ঝড় বয়ে চলেছে। ফিটনেস ট্রেনারের কাছে দিবালারা যখন ওয়ার্মআপ করছিলেন, চিন্তিত মুখে মাঠের মধ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ। কখনও উদাসীনভাবে সামনে পড়ে থাকা বলে একটা হালকা শট নিলেন। কখনও আবার শূন্য দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। মেসি মাঠে না ফেরা পর্যন্ত যে স্বস্তি ফিরবে না স্কালোনির!





অর্থসংবাদ/কেএ


আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সেরা কারা?
সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েই বছর শেষ করলেন রোনালদো
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সাফল্যের হার ৭১ শতাংশ
ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের
ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে বাংলাদেশের নাহিদা
বাংলাদেশ ম্যাচে কে এই নারী আম্পায়ার
সুখের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বেরসিক বৃষ্টির জয়
টাইগারদের আগামী বছরের কর্মসূচিতে নেই অস্ট্রেলিয়া-ইল্যাংন্ড
মাশরাফির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন সোহান
২০২৬ বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা হতে পারে জানুয়ারিতে