বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-জুন সময়ের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট) ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চীনেই উৎপত্তি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। পরে ইউরোপ আমেরিকাসহ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা-বাণিজ্য। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পুরো বিশ্ব। অর্থনীতিতে চলছে মন্দাভাব। এসব কারণে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। তবে বিদেশি বিনিয়োগ না বাড়লে দেশে সার্বিক বিনিয়োগ বাড়বে না। তাই মহামারির অর্থনৈতিক ক্ষতি পোষাতে যেকোনো মূল্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, গেল অর্থবছরে দেশে এফডিআই এসেছে ৩১৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ১৮০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই কমেছে ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ ও নিট কমেছে ৩১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
আগের অর্থবছরে (২০১৮-১৯) এফডিআই এসেছিল ৪৯৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার এবং নিট এফডিআই এসেছিল ২৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
এদিকে গত অর্থবছরে দেশের শেয়ারবাজারে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট)। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শেয়ারবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। সেই হিসাবে পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট বেড়েছে ৬১ দশমিক ৪০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাস (জুলাই-মে) সময়ে পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট ছিল মাত্র এক কোটি ২০ ডলার। কিন্তু অর্থবছরের শেষ মাস জুনে এসে তা দাঁড়ায় ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। অর্থাৎ এক মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশিরা বিনিয়োগ করেছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
জানা গেছে, আস্থার সংকট ও ধারাবাহিক দর পতনের কারণে দেশের শেয়ারবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থায় নতুন নেতৃত্ব আসায় এখন বিনিয়োগকারীরা বিষয়গুলোকে ইতিবাচক দেখছে। এসব কারণে আস্থা ফিরছে বাজারে। বাড়ছে বিদেশি বিনিয়োগ। ফলে দীর্ঘদিন পরে বাজারে লেনদেনও বেড়েছে।