১৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেও লভ্যাংশ না দেওয়ায় গছিহাটার ব্যাখ্যা তলব

১৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেও লভ্যাংশ না দেওয়ায় গছিহাটার ব্যাখ্যা তলব

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস লোকসান কাটিয়ে বড় মুনাফায় ফিরেছে। ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কিছুই দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে বেশ কয়েক বছর লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর অভিযোগও উঠেছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। এ কারণে কোম্পানিটির কাছে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ ব্যাখ্যা তলব করেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।


সম্প্রতি গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।


২১ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মুনাফা করেও বিনিয়োগকারীদের কিছুই দেয়নি গছিহাটা শিরোনামে অর্থসংবাদে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই বিষয়টি বিএসইসির নজরে আসে। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কমিশন।


বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া সংবাদে উল্লিখিত সমস্যাগুলোর বিষয়ে গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মসকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ১১(২) এর অধীনে কমিশনের কাছে তথ্য ও নথির সঙ্গে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। এই চিঠি জারির পর থেকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।


পুঁজিবাজারের ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস পুনরায় ব্যবসা শুরু করার কথা জানিয়েছে। চলতি বছরের গত ১০ আগস্ট কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। কোম্পানিটি ২০২০ সালে ১৭ কোটি টাকা লোকসান করলেও ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে মুনাফা দেখায় প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।


সূত্র মতে, ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে তালিকাভুক্ত গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস পুনরায় ব্যবসা শুরু করার কথা জানিয়েছিল কয়েক মাস আগেই। গত ১০ আগস্ট কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। ২০২০ সালে ১৭ কোটি টাকা লোকসান হলেও ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানিটির মুনাফা দেখানো হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।


গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচারের ২০২১ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এক বছরে (২০২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৭২ টাকা ৬৭ পয়সা। সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয় ১৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ৪৩৭ টাকা।


২০২০ সালে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৮৪ টাকা ৭৭ পয়সা। ওই বছর কোম্পানিটি সর্বমোট ১৭ কোটি ৫৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫২৭ টাকা লোকসান দিয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঠকাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।


জানা গেছে, গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কৃষিভিত্তিক কোম্পানি। ১০৯ একর জমির মালিকানা থাকা সত্ত্বেও কার্যকারী মূলধনের ঘাটতির কারণে গত দুই দশক ধরে খারাপ অবস্থায় রয়েছে কোম্পানিটি। ১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার। ২০০২ সাল থেকে কার্যকরী কার্যক্রম পরিচালনা এবং লভ্যাংশ প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়ায় ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়।


গত বছরের (২০২১) ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি ওটিসি মার্কেট বিলুপ্ত ঘোষণা করে। ফলে ওটিসি মার্কেটের আওতাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও ভবিষ্যত সম্ভাবনার ভিত্তিতে এসএমই প্ল্যাটফর্ম ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে ওটিসি মার্কেট থেকে গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচারকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।


ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচারের ৫৬ দশমিক ০২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ শেয়ার। বাকি ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।


২০২১ সালে শেয়ারপ্রতি ৬৭২ টাকা ৬৭ পয়সা আয় করলেও কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ থাকা সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ দেয়নি গছিহাটা অ্যাকুয়াকালচার। এমনকি সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও ইপিএসের বিষয়ে কোন তথ্য জানানো হয়নি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত