অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে যাত্রার শুরুতেই আসে ৭৫’র আঘাত

অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে যাত্রার শুরুতেই আসে ৭৫’র আঘাত

'অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ যখন যাত্রা শুরু করে, ঠিক সেই সময়েই ৭৫’র ১৫ আগস্টের আঘাতটা আসে। থেমে যায় উন্নয়নের অগ্রযাত্রা। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো।'





আজ (২১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৫০টি জেলায় ১০০টি মহাসড়ক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।





সড়ক পরিহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল টাঙ্গাইল ও খুলনা জেলা। বাকি জেলাগুলো প্রজেক্টরের মাধ্যমে যুক্ত হয়।





এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কত দেশকে দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখি। প্রকৃতপক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি বেঁচে থাকতেন, তার হাতে যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব থাকতো, তাহলে ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হতো বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত। কিন্তু ঘাতকদের কারণে সেটা হতে পারেনি। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসেই আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করার সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করি।





তিনি বলেন, এই মহাসড়কগুলো উন্নতমানের করা হলো। আমি মনে করি এর মাধ্যমে বাংলাদেশে নিরাপদে সড়ক যাতায়াতে বড় সুবিধা হবে, অর্থনৈতিকভাবে সব অঞ্চলের মানুষ লাভবান হবে। আমরা যখনই সরকারে এসেছি, যোগাযোগ ব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। শুধু সড়ক যোগাযোগ নয় রেলপথ, নদীপথ, আকাশপথ, সবক্ষেত্রেই আমরা উন্নয়ন করে যাচ্ছি। উন্নয়নের মূল চাবিকাঠির একটি হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। প্রতি ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই-১ আমরা উৎক্ষেপণ করেছি। ব্রডব্যান্ড দিয়ে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি।





সরকারপ্রধান বলেন, আগে গ্রামের মানুষের স্যান্ডেল হাতে নিয়ে রাস্তায় চলতে হতো। এখন আর সেটা করতে হয় না। এখন রিকশা, ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল, গাড়ি সবই চলাচল করতে পারে। সারাদেশের গ্রাম পর্যায়ে আমরা যোগাযোগের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি। তাছাড়া নদীগুলো ড্রেজিং করে নৌপথগুলো সচল করে দিচ্ছি। প্রথম বার যখন সরকারে এসেছিলাম, তখনও অনেকগুলো সেতু, এমনকি ঢাকার সঙ্গে দোহার নবাবগঞ্জের তুলসী মরিচা সেতুও আমার হাতে করা। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য আমরা এরকম বহু সড়ক করে দিয়েছি।





তিনি বলেন, আমাদের শুনতে হয় যে আওয়ামী লীগ সরকার দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর আগে ১০০টা সেতু আমরা একইসঙ্গে উদ্বোধন করলাম, আজকে ১০০টা মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ সম্পন্ন করলাম। যারা বলে আওয়ামী লীগ দেশ ধ্বংস করে দিয়েছে, কিছু নাকি করেনি, দেশের মানুষ এটা বিশ্বাস করবে কি না সেটাই আমার প্রশ্ন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ আর ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। এর বাইরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশের জন্য কী করেছে? আর কতটুকু উন্নয়ন করেছে।





আমরা সাধারণ মানুষের উন্নয়নে বিশ্বাস করি জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি গণমানুষ যেন ভালো জীবন যাপন করতে পারে সেই ক্ষেত্রে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা, খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার প্রসার ঘটানো, ৪র্থ শিল্প বিপ্লের উপযুক্ত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জ্ঞানে ও দক্ষতায় প্রতিটি বাঙালি যেন সেভাবে তৈরি হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।





আমরা সেতু বা সড়ক করে দিচ্ছি, কিন্তু সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব, যথাযথভাবে ব্যবহার করা এবং পরিচ্ছন্নতার দিকে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।





গাড়ি চালকদের জন্য সড়কে বিশ্রামাগার তৈরি করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তত কয়েক কিলোমিটার চলার পর তারা যেন বিশ্রাম নিতে পারে। তারা কতটুকু পথ চলতে পারে সেটি হিসেব করে ড্রাইভারদের জন্য বিশ্রামের দরকার। নয়তো অল্টারনেটিভ ড্রাইভার রাখতে হবে। তাহলে সড়কে দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে।





শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে অনেকেই ড্রাইভার ব্যবহার করেন। নিজেরা গাড়ি চালান না। গাড়ি চালান না ঠিক, ড্রাইভার ব্যবহার করেনম সেই ড্রাইভার সময়মতো খাবার পেলো কি না? পানিটা পেল কি না? বা তার বিশ্রামটা হলো কি না? সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।





এসময় তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান করে বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটলে ড্রাইভার কিন্তু গাড়ি থামায় না, ভয় পায়। কারণ সঙ্গে সঙ্গে মানুষ গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিতকে সাহায্য না করে ড্রাইভারকে মারতে শুরু করে। গণপিটুতে ড্রাইভার মারা যায়। এই কাজটা দয়া করে কেউ করবেন না। ইচ্ছে করে কেউ মানুষকে মারে না, ধাক্কা দেয় না। যখন দুর্ঘটনা হয় তখন কী কারণে হয়েছে, হয়তো ড্রাইভারের কারণে হয়েছে বা যে যাচ্ছে তার কারণে হতে পারে। আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধ করলে তাকে ধরে থানায় দিয়ে দেন। তার বিচার হবে। আমরা আইনও করে দিয়েছি।





অর্থসংবাদ/এসএম


আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু