আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট হবে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ও শেষ বাজেট। প্রাথমিকভাবে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা।
বর্তমান মেয়াদের শেষ বাজেট মূল্যস্ফীতি, ভর্তুকি, রিজার্ভ সংকট এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে সরকারকে।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে আগামী বাজেটের খসড়া রূপরেখা অনুমোদন করা হয়। কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের আরও কয়েকটি বৈঠকের পর আগামী জুন মাসের শুরুতে বাজেটের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।
কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী অর্থবছরের জন্য চারটি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো মূল্যস্ফীতি, ভর্তুকি, রিজার্ভ সংকট ও ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখা। নির্বাচনী বাজেট হিসেবে মূল্যস্ফীতি ও ভর্তুকিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আগামী বাজেটে। এজন্য বাজেটের আকার প্রাথমিকভাবে সাত লাখ ৫০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা প্রাক্কলন করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার। বৈঠকে সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ছয় লাখ ৫৭ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা করা হচ্ছে। সেই হিসাবে সংশোধিত বাজেটের তুলনায় আগামী বাজেটের আকার বাড়ছে ৯২ হাজার ২২৩ কোটি টাকা।
জানা গেছে, অর্থনীতির খারাপ অবস্থার মধ্যেও জিডিপির উচ্চাশা থেকে সরে আসেনি সরকার। আগামী অর্থবছরে তাই জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরেও একই পরিমাণ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা রয়েছে। আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ধরে রাখার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অথচ চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের মধ্যে চার মাস মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের বেশি ছিল।
বৈঠকে আগামী বাজেটে মোট রাজস্বপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে চার লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য দেওয়া আছে। সরকারের রাজস্ব আয়ের বেশির ভাগ আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে। আগামী অর্থবছরে এনবিআরকে চার লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। চলতি বাজেটে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য পেয়েছে সংস্থাটি। সেই হিসাবে আগামী বাজেটে লক্ষ্য বাড়বে ৭২ হাজার কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাজেটে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। জনসম্পৃক্ত নতুন প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি থাকবে। এজন্য নতুন বাজেটে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপির প্রাথমিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বাজেটের এডিপির আকার দুই লাখ ৬৪ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।
এ ছাড়া নতুন বাজেটে ঘাটতি প্রাথমিকভাবে দুই লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। চলতি বাজেটে ঘাটতি দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি বাড়ছে ১৯ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।