ভুলে ভরা ডিএসইর সঠিক তথ্য কোনটি?

ভুলে ভরা ডিএসইর সঠিক তথ্য কোনটি?

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। প্রতিদিন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী নিজেদের শেয়ার লেনদেন করে থাকেন এ বাজারে। অথচ যেখান থেকে বিনিয়োগকারীরা তথ্য পেয়ে থাকেন, সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ফের ডিএসইর ওয়েবসাইটে দেওয়া বিভিন্ন তথ্যে অসামঞ্জস্যতা দেখা গেছে। ফলে কোন তথ্যটি সঠিক তা নিয়েই দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন বিনিয়োগকারীরা।


জানা গেছে, আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেওয়া হয়েছে। মোট লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানি, দরবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানি এবং এক কোম্পানির দরবৃদ্ধি নিয়ে একাধিক তথ্য দেওয়া হয়েছে ডিএসইর ওয়েবসাইটে। বিনিয়োগকারীরা ডিএসইর কোন তথ্যকে সঠিক হিসেবে নেবে সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।


ডিএসইর ওয়েবসাইটের হোমপেইজে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার এক্সচেঞ্জটিতে ২৮৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর অপরিবর্তিত ছিল ২০৩টির। দর কমেছে ৭৩টির এবং ৯ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে মার্কেট স্ট্যাটিসটিকসের তথ্য মতে, একইদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৯৩ প্রতিষ্ঠান। যেখানে ২০৫টির দর অপরিবর্তিত দেখানো হয়েছে। দর পতন হওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৭৭টি। এছাড়াও ১১ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে স্ট্যাটিসটিকসে।


ডিএসইর মার্কেট স্ট্যাটিসটিকসে দেওয়া তথ্য আর ওয়েবসাইটের হোমপেইজে তথ্য অনুযায়ী, ওয়েবসাইটের হোমপেইজে দেওয়া তথ্যের তুলনায় মার্কেট স্ট্যাটিসটিকসে দেওয়া তথ্যে মোট লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানির সংখ্যা ৮টি বেশি। দরপতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ডিএসইর ওয়েবসাইট থেকে মার্কেট স্ট্যাটিসটিকসে ৫টি বেশি। মার্কেট স্ট্যাটিসটিকসে দরবৃদ্ধি পাওয়া শেয়ারের সংখ্যা ১১টি দেখানো হলেও ওয়েবসাইটের হোমপেইজে তা ৯ টি দেখানো হয়েছে। আবার টপটেন গেইনার লিস্টেও দরবৃদ্ধি পাওয়া শেয়ারের সংখ্যা ৯টিই দেখানো হয়েছে। তবে এটলাস বাংলাদেশের শেয়ারদর কত শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে সে বিষয়টিও ডিএসইর কোম্পানি প্রোফাইলে দেওয়া হয়নি।


এসব জানতে বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান শফিকুর রহমান অর্থসংবাদকে বলেন, হোমপেইজে দেওয়া তথ্য আর মার্কেট স্ট্যাটিসটিকসে দেওয়া তথ্য একই হওয়ার কথা। দুই জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন তথ্যের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে সেটি কেন হয় তা আইটি বিভাগে কথা বলে জানাতে হবে।


ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর কারিগরি ত্রুটির বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও জটিলতার কারণে গত ২৪ অক্টোবর বেলা ১০টা ৫৮ মিনিটে বন্ধ হয়ে যায় লেনদেন। পরবর্তীতে দুপুর ২টা ১০ মিনিট থেকে আড়াইটা পর্যন্ত মাত্র ২০ মিনিটের জন্য লেনদেন চালু করে ডিএসই। ওইদিন লেনদেন শেষে নিজেদের ওয়েবসাইটের লেনদেনের হিসেবের সঙ্গে ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের হিসাবের গরমিল দেখা যায়


২৪ অক্টোবর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওইদিন এক্সচেঞ্জটিতে ৩৩৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। তবে একইদিন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের পরিমাণ আরও বেশি দেখায়।


সংশ্লিষ্ট সূত্র অর্থসংবাদকে জানিয়েছিল, ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে লেনদেনের পরিমাণ দেখানো হয় ৫৫৪ কোটি টাকা। যা ডিএসই’র ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যের চেয়ে ২১৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা বেশি ছিল।


এছাড়াও ২৪ অক্টোবর মেট্রো স্পিনিং মিলসের মোট ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। অপরদিকে ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার লেনদেনের সংখ্যা দেখানো হয় ২ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫টি।


দুই প্ল্যাটফর্মে দুই ধরণের তথ্যের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। তবে ডিএসই জানিয়েছিল ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যই সঠিক।


ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে যে তথ্য দেওয়া হয়, সেখানে ৫৫৪ কোটি টাকা লেনদেন দেখানো হয়েছে। অথচ যখন ডিএসইতে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয় তার আগে পর্যন্ত লেনদেন ছিল ২০০ কোটির সামান্য বেশি। আর কারিগরি ত্রুটি সারিয়ে দুপুর ২টা ১০ মিনিট থেকে ২টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত মাত্র ১৫ মিনিটে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আদৌ লেনদেন করা সম্ভব কি না, সেটি নিয়েও প্রশ্ন ছিল বাজার সংশ্লিষ্টদের।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত