বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৈঠকে শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, আজ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১ম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩য় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ১টি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১টি, বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ১টি প্রস্তাব ছিল। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ৪টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৩৭৯ কোটি ৩৭ লাখ ৩ হাজার ৬৪ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের ডব্লিউপি-২ প্যাকেজের লট নং ডিএস-৩-এর পূর্ত কাজ ক্রয়ের প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৯টি প্রতিষ্ঠানের দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে কারিগরিভাবে ৬টি প্রস্তাব রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এইচইজিও, চায়না ও মীর আকতার, বাংলাদেশ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পে ব্যয় হবে এক হাজার ৫৫ কোটি ২০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৫৪ টাকা।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ সদস্যদের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং-ডব্লিউডি-৫/২ এর আওতায় বৈদ্যুতিক কাজ ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের আওতায় বৈদ্যুতিক কাজ ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে কারিগরিভাবে ১টি প্রস্তাব রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত একমাত্র রেসপনসিভ দরদাতা প্রতিষ্ঠান নূরানী কন্সট্রাকশন লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৩ কোটি ২০ লাখ ১২ হাজার ২৭২ টাকা।
সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন টিসিবি কর্তৃক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৷ ভারতের ইটিসি এগ্রো প্রোসেসিং প্রাইভেট লিমিটেডের (ঢাকায় স্থানীয় এজেন্ট: এক্সপোর্ট ট্রেডিং বিডি লিমিটেড) কাছ থেকে ৭৩ কোটি ৯৬ লাখ ৯৬ হাজার ৮০০ টাকায় এ ডাল কেনা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য এক প্রস্তাবে টিসিবি কর্তৃক স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শুন শিং এডিবল ওয়েল লিমিটেডের কাছ থেকে ২০০ কোটি ২০ লাখ টাকায় এ তেল কেনা হবে। আগের মূল্য ছিল প্রতি লিটার ১৮৪ দশমিক ৫ টাকা। বর্তমানে ১৮২ টাকা দরে এ তেল কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে শুন শিং এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা। এজন্য ব্যয় ধরা হয় ১০১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি লিটারের দাম ধরা হয় ১৮৪ টাকা ৫০ পয়সা।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেনারেল এভিয়েশন হ্যাঙ্গার, হ্যাঙ্গার এপ্রোন এবং ফায়ার স্টেশন এর উত্তর দিকে এপ্রোন নির্মাণ’ প্রকল্পের পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সিসিজিপি সভার অনুমোদনক্রমে প্রকল্পের পূর্ত কাজ ৩৮০ কোটি ৪৮ লাখ ৪২ হাজার ১৩৬ টাকায় বাস্তবায়নের জন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে বিইউসিজি, এনডিই এবং অ্যারোনেস, বাংলাদেশ নিয়োগ পায়।
চুক্তি অনুসারে কাজ বাস্তবায়নকালে কিছু টেন্ডারভুক্ত/টেন্ডার বহির্ভুত আইটেম হ্রাস/বৃদ্ধি হওয়ায় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৬ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৪৩৮ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা হয়। সভায় ‘অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স অব থার্ড টার্মিনাল অ্যাট হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট’ প্রকল্পটি পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ইতোমধ্যে জাপানের ৫টি প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
অর্থসংবাদ/এসএম