সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস সোমবার (১৭ আগস্ট) আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন শুরু হতেই স্বর্ণের দাম বাড়ার আভাস মেলে। দিনভর দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪৩ ডলার বেড়ে যায়।
এই বড় উত্থানের পর মঙ্গলবারও লেনদেন শুরু হতে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৬ ডলারের ওপরে বেড়ে এক হাজার ৯৯২ ডলারে উঠেছে। এতেই সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এর আগে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম রেকর্ড দুই হাজার ৭৫ ডলারে ওঠে। তবে এই দাম বাড়ার পর গত ৭ আগস্ট পতনের মুখে পড়ে স্বর্ণ। আর গত সপ্তাহের মঙ্গলবার স্বর্ণের দামে রীতিমতো ধস নামে। একদিনে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১১২ ডলার কমে যায়।
বিশ্ববাজারে এই রেকর্ড দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। ভরিতে সাড়ে তিন হাজার টাকা কমানো হয় স্বর্ণের দাম।
অবশ্য দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর আগেই বিশ্ববাজারে আবার দাম বাড়ার আভাস দেখা দেয়। বুধবার লেনদেনের শুরুতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২১ ডলার কমে গেলেও লেনদেনের পরবর্তী সময়ে প্রায় ৩০ ডলার বেড়ে যায়। এরপর বৃহস্পতিবারও স্বর্ণের দাম বাড়ে। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৬০ ডলারে উঠে আসে।
তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার আবার দরপতন হয়। এদিন প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১৬ দশমিক ২০ ডলার কমে এক হাজার ৯৪৩ দশমিক ৬৫ ডলারে দাঁড়ায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কমে ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামের এই অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সময় বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘গ্রাহকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এবং তাদেরকে বাজারমুখী করতে আমরা স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা বিশ্ববাজারের সঙ্গে আপডেট থাকতে চাই। আমরা পরিস্থিতি দেখব। যদি বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম আবার দুই হাজার ডলারে ওঠে, তাহলে আমরাও দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে। তবে দুই হাজার ডলারের নিচে থাকলে আমাদের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই।’
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামের উত্থান-পতনের বিষয়ে বাজুসের সাবেক সভাপতি দিলিপ রায় বলেন, ‘স্বর্ণের বাজারে এমন অস্থিরতা আমি আগে কখনো দেখিনি। স্বর্ণের দাম বাড়া-কমা দুটোই অস্বাভাবিক।’
এদিকে স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহে রুপার দামেও বড় পতন হয়। সপ্তাহের ব্যবধানে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স রুপার দাম ২৬ দশমিক ৪২ ডলারে নেমে আসে।
এই দরপতনের পর সোমবার স্বর্ণের মতো রুপার দামেও উত্থান হয়। মঙ্গলবারও দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২৭ দশমিক ৭৮ ডলারে উঠে এসেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে রুপার দাম বেড়েছে ১০ দশমিক ১৭ শতাংশ।