ডিএসইর সদস্য ও বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজসহ চারদিন ধরে তারা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা সমাধানে ডিএসই কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
এদিকে ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে। ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কাছে সমস্যার ভিডিও চিত্র চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু ভিডিও চিত্র পাওয়া গেছে।
ব্রোকারেজ হাউসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ক্রয়-বিক্রয়ের আদেশ দিলে দীর্ঘসময় লাগছে। এতে অনেক সময় সঠিক দামে শেয়ার বিক্রি বা কিনতে পারছেন না গ্রাহকরা। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
একাধিক ব্রোকারেজ শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, লেনদেনের গতি বাড়ার পর থেকেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আজও সমস্যা হচ্ছে। ক্রয়-বিক্রয়ের অর্ডার নিতে অনেক সময় নিচ্ছে। এমন কি কোড পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসইর শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৭ সালেও লেনদেন বাড়লে আমরা এমন সমস্যার মুখে পড়েছিলাম। সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সফটওয়্যার কর্তৃপক্ষ প্রি-ওপেনিং সিস্টেম চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন। ডিএসইর পর্ষদ ইতোমধ্যে প্রি-ওপেনিং সিস্টেম অনুমোদন করেছে। এখন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনুমোদন দিলেই তা চালু করা হবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।
তিনি বলেন, প্রি-ওপেনিং সিস্টেম হলো লেনদেন চালুর আগেই ক্রয়-বিক্রয়ের অর্ডার প্লেস করা। এক্ষেত্রে আমরা ১৫ মিনিট প্রি-ওপেনিং প্রিয়ড চেয়েছি। অর্থাৎ ১০টায় লেনদেন শুরু হলে ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে ক্রয়-বিক্রয়ের আদেশ বসানো যাবে। তবে লেনদেন হবে ১০টা থেকেই।
তিনি আরও জানান, ব্রোকারেজ হাউসগুলো কী ধরনের সমস্যার মুখে পড়ছে তা ভিডিওসহ আমরা পাঠাতে বলেছিলাম। ইতোমধ্যে কিছু সমস্যার ভিডিও পেয়েছি। তারপরও আজ আমরা বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে সরাসরি পরিদর্শন করে সমস্যার চিত্র দেখব।
এবিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
যোগাযোগের চেষ্টা করে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা জিয়াউর করিমকেও পাওয়া যায়নি।
তবে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন অর্থসংবাদকে বলেন, ‘আমাকে টেকনিক্যালি বোঝানো হয়েছে প্রি-ওপেনিং সিস্টেম চালু করা হলে এই সমস্যা হবে না। এজন্য আমরা প্রি-ওপেনিং এর সময় বাড়িয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বিনিয়োগকারীরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যার মুখে না পড়েন। সেজন্য আমরা কাজ করছি।আমাদের বোর্ডে এ বিষয়ে সময় আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছ্ হয়তো সময়টা বাড়ানো হলে এ সমস্যা থাকবেনা।সফটওয়্যারের ক্যাপাসিটি আরও বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের লেনদেন সঠিকভাবে করার জন্য ২০১৪ সালের মার্চ মাসে বিশ্বের সর্বাধুনিক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম স্থাপনে যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক ওএমএক্স এবং ফ্লেক্স ট্রেড সিস্টেমসের সঙ্গে চুক্তি করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। একই বছরের ১১ ডিসেম্বর ‘ফ্লেক্স ট্রেড সিস্টেমস’ নামে নতুন সফটওয়্যার চালু করে ডিএসই।
অটোমেটেড ট্রেডিং সিস্টেম রিনিউয়াল প্রজেক্ট নামে ডিএসইর এই প্রকল্পে ব্যয় হয় ১০০ কোটি টাকার ওপরে। তবে কমিশন বাদে এই প্রকল্পের মোটা অংকের টাকা ডিএসইর কর্মকর্তাদের ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ ওঠে।