সাংবাদিক থেকে রাষ্ট্রপতির চেয়ারে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

সাংবাদিক থেকে রাষ্ট্রপতির চেয়ারে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। সবকিছু ঠিক থাকলে তিনিই দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। তার মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী সাহাবুদ্দিন একাধারে আইনজীবী, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও বিচারক ছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার তিনি।

৭৫র’ পরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় ২০ আগস্ট সামরিক আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাগারের কাটিয়েছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
তার জন্ম ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায়। তার বাবা মরহুম শরফুদ্দীন আনসারী এবং মা মোসাম্মৎ খায়রুন্নেছা।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। ছাত্রাবস্থায় ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীন বাংলা ছাত্রপরিষদের পাবনা জেলার নেতা হিসেবে পাবনায় স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারীদের অন্যতম মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পাবনা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৭১ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। ১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। কর্মজীবনে তিনি সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।

অধুনালুপ্ত বাংলার বাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পাবনা প্রেস ক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার। এছাড়া প্রেষণে আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধি হিসেবে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আইন সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন সাহাবুদ্দিন। ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তখন সরকারের কাছে এ বিষয়ে ১৩৯৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট পেশ করেছিলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

২০০১ সালে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত প্রথম সচিবের রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক থাকাকালীন ‘রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা’ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সদস্য হিসেবে ওয়াশিংটন, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফর করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন, কানাডা, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, বেলজিয়াম, জার্মানি, ভারত, ভুটান, পাকিস্তান, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন সাহাবুদ্দিন।

তিনি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এর মধ্যে ১৯৭৩-৭৫ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সম্পাদক, ১৯৭৮-৮২ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলা পরিবার পরিকল্পনা সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।

তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের যুগ্ম সচিব থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তাদের একমাত্র সন্তান মো. আরশাদ আদনান একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু