পুঁজিবাজারে এসেই অর্থসংকটে তিন কোম্পানি

পুঁজিবাজারে এসেই অর্থসংকটে তিন কোম্পানি
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি সর্বশেষ হিসাববছরের জন্য ঘোষিত লভ্যাংশ এখনো বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে প্রেরণ করেনি। আর্থিক সংকটের কারণে কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারছে না বলে জানা গেছে। বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, লভ্যাংশ অনুমোদনের পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও এখনো তাঁরা লভ্যাংশ বুঝে পাননি।

অনুমোদনের পরও বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানিগুলো হলো- তওফিকা ফুড অ্যান্ড লাভেলো আইস্ক্রিম, লুব-রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড এবং বিডি পেইন্টস লিমিটেড।

জানা গেছে, গত বছরের ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ হিসাববছরের (২০২২) জন্য তওফিকা ফুড অ্যান্ড লাভেলো আইস্ক্রিম ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ২০ ডিসেম্বর কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আইন অনুযায়ী লভ্যাংশ অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে প্রেরণ করতে হবে। তবে লভ্যাংশ অনুমোদনের পর ৫৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়নি তাওফিকা ফুডস।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য মতে, সমাপ্ত বছরে (২০২২) তাওফিকা ফুডস শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৩ পয়সা আয় করেছে। হিসাববছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) ছিল ১২ টাকা ৯০ পয়সা। আয় ও সম্পদ দুটোই আগের বছরের (২০২১) তুলনায় বেড়েছে। ২০২১ সালে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৪১ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ছিল ১২ টাকা ৫৭ পয়সা।

তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি লুব-রেফ বাংলাদেশ লিমিটেডও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়নি। জানা গেছে, সর্বশেষ হিসাববছরের জন্য (২০২২) ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে লুব-রেফ। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভায় ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদন করে কোম্পানিটি। তবে অনুমোদনের ৪৯ দিন পার হলেও বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়নি লুব-রেফ।

এদিকে শেয়ারবাজারের এসএমই (স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর প্লাটফর্ম) মার্কেটে তালিকাভুক্ত বিডি পেইন্টস লিমিটেডও সর্বশেষ হিসাববছরের জন্য নগদ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। গত ২৬ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভায় এ লভ্যাংশ অনুমোদনও করে কোম্পানিটি। এই প্রতিষ্ঠানটিও এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে লভ্যাংশ জমা দেয়নি।

সূত্র মতে, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন লভ্যাংশ বিতরণ নিয়ে ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি এক আদেশ জারি করে। ওই আদেশে বলা হয়, অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে লভ্যাংশ জমা করতে হবে। তবে কোম্পানিগুলো আর্থিক সংকটে থাকায় বিনিয়োগকারীদের এখনো লভ্যাংশ দেয়নি।

জানা গেছে, ২০২০ সালে দেশের শেয়ারবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন করে লাভেলো আইস্ক্রিম। একই বছর পুঁজিবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে লুব-রেফ বাংলাদেশ। আর গত বছর (২০২২) শেয়ারবাজার থেকে ১২ কোটি টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এসএমই মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয় বিডি পেইন্টস।

তাওফিকা ফুডসের কোম্পানি সচিব দিদারুল আলম অর্থসংবাদকে বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি বিএসইসিতে আবেদন করেছি লভ্যাংশ বিতরণে আরও সময়ের জন্য। ইতোমধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেওয়া শুরু করেছি। তিনি বলেন, আর্থিক সংকট কারণে লভ্যাংশ দেরিতে বিতরণ করা হচ্ছে- এটি সঠিক নয়।

বিডি পেইন্টসের কোম্পানি সচিব মামুন অর রশিদ অর্থসংবাদকে বলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেওয়া হবে। আর প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদেরও চলতি মাসের মধ্যেই লভ্যাংশ দেওয়া হবে। কোম্পানির কোন আর্থিক সংকটের কারণে নয়, ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেশের বাইরে থাকায় লভ্যাংশ সময়মতো দিতে পারিনি।

লুব-রেফ বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব মশিউর রহমানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

নির্দিষ্ট সময়ে লভ্যাংশ বিতরণ না করার বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম অর্থসংবাদকে বলেন, ঘোষিত লভ্যাংশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বিতরণ করতে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারী, প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডারসহ সব বিনিয়োগকারীকেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ দিতে হবে। কোন কোম্পানি লভ্যাংশ বিতরণ নির্দিষ্ট সময়ে না করলে কমিশন নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত