ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বন্দরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৬৩৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে মাসভিত্তিতে জুলাইয়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৬ কোটি ১৫ লাখ, আগস্টে ৮৪ কোটি ৪১ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ, অক্টোবরে ১০০ কোটি ৮৮ লাখ, নভেম্বরে ৯৮ কোটি ৫৬ লাখ, ডিসেম্বরে ৮৪ কোটি ১২ লাখ এবং জানুয়ারিতে ১০৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
গত সাত মাসে এ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের চেয়ে কিছু বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। টাকার অংকে এর পরিমাণ ৩২৩ কোটি ২৪ লাখ। যেখানে জুলাইয়ে ৪৪ কোটি ৭৪ লাখ, আগস্টে ৫৫ কোটি ২ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৫৪ কোটি ৬০ লাখ, অক্টোবরে ৪০ কোটি ৯৫ লাখ, নভেম্বরে ৪২ কোটি ৮ লাখ, ডিসেম্বরে ৩৯ কোটি ৯১ লাখ এবং জানুয়ারিতে আদায় হয়েছে ৪৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার রাজস্ব। সে হিসেবে লক্ষ্যমাত্রায় ঘাটতি রয়েছে ৩১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এর আগের অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এ বন্দরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪২০ কোটি ২ লাখ টাকা। সে হিসাবেও চলতি অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি রয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের সব বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানি করা গেলেও কোন বন্দর দিয়ে কী ধরনের পণ্য আমদানি করা যাবে, তা নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে। সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট পণ্যই ভোমরা দিয়ে আমদানি করতে হয়।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজি দিলওয়ার নওশাদ রাজু বলেন, ‘সম্ভাবনাময় হওয়ার পরও ভোমরা স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। এর মূল কারণ দেশের অন্য সব বন্দরের তুলনায় ভোমরা বন্দরে পণ্য আমদানিতে বৈষম্য। পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে অন্যান্য বন্দরের ব্যবসায়ীরা যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা পান, তা যদি এ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের দেয়া হতো, তাহলে রাজস্ব ঘাটতির পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। বরং তা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েও যেতে পারত।’
তবে রাজস্ব ঘাটতির পেছনে যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটকেই দায়ী করলেন ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের উপসহকারী কমিশনার নেয়ামুল হাসান। রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের পাশাপাশি সম্প্রতি ব্যাংকে এলসি জটিলতাসহ ডলার সংকটও রাজস্ব ঘাটতির কারণ। ব্যবসায়ীরা যদি ঠিকমতো ব্যাংকে এলসি খুলতে না পারে, তাহলে পণ্য আমদানি স্বাভাবিকভাবেই ব্যাহত হবে। যে কারণে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে। তার পরও ঘাটতি কমানোর জোর চেষ্টা চলছে। চলতি অর্থবছরের সাত মাস পার হলেও সামনে রয়েছে আরো পাঁচ মাস। এ সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।’