‘বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগের গতিপ্রবাহে কভিড-১৯ এর প্রভাব : সমস্যা ও উত্তরণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে পলিসি এক্সচেঞ্জ-এর চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ ‘কি-নোট’ উপস্থাপনা করেন। এছাড়া বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাউকি ইতো, মার্কিন ডেপুটি চিফ অব মিশন জোআন ওয়াগনার, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ-এর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, ডিসিসিআই-এর জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট এনকেএ মবিন অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শামস মাহমুদ স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
সরকারি সুবিধা ও প্রণোদনার ক্ষেত্রে দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করা হবে না বলে মন্তব্য করে সালমান এফ রহমান বলেন, এমনকি শতভাগ বিদেশী মালিকানাধীন কোম্পানিও সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সকলের জন্য কর হার কমাতে সরকার কর জাল আরও বিস্তৃত করতে চায়। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় জিডিপি ও ট্যাক্সের অনুপাত বাংলাদেশেই সবচেয়ে কম, এমনকি পাকিস্তানের চেয়েও কম। যেটা ঘটছে তা হলো যেসব মানুষ ইতিমধ্যেই ট্যাক্স পরিশোধ করছে, আমরা তাদের ওপরই নতুন বোঝা চাপাই। তাই আমাদের আয়করের জাল বিস্তৃত করতে হবে। ইতিমধ্যেই এনবিআর কয়েকদিন আগে ঘোষণা দিয়েছে যে সঠিকভাবে ট্যাক্স আদায়ের জন্য নতুন ভ্যাট মেশিন ইতিমধ্যেই আমদানি করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ‘ব্যবসা সহজীকরণ’ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নীতকরণের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক নেতৃত্বের মধ্যে একটি গুরুতর উপলব্ধি এসেছে যে আমাদের সংস্কার করতে হবে। বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে। মনোভাবে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এখন যারা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন, তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।’
এছাড়া বেসরকারি খাতের মানসিকতাও পরিবর্তন প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নয়, বরং সেখানকার সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরাই নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
তিনি বলেন, সহজেই পরিবর্তনীয় বিধিবিধান পরিবর্তনের পর সরকার এখন আইনি সংস্কারে নামতে চায়। ব্যবসা সহজীকরণের জন্য দেশের দেউলিয়া আইন পরিবর্তন ও নতুন কোম্পানি অ্যাক্ট প্রণয়নের কাজ শুরু হবে। তার ভাষ্য, ‘আমরা এখন আত্মবিশ্বাসী যে, আগামী বছরের অক্টোবরে যখন নতুন র্যাং কিং প্রকাশিত হবে, তখন বাংলাদেশের অবস্থান ডাবল-ডিজিটে উন্নীত হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি ও মার্কেট ক্যাপিটাইলেজেশনের অনুপাত বিশ্বে অন্যতম সর্বনিম্ন। তিনি এক্ষেত্রে সিকিউরিটি স্টক এক্সচেঞ্জ কমিশনের নতুন নেতৃত্বকে ‘সাহসী পদক্ষেপে’র জন্য ধন্যবাদ জানান, যার কারণে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।