রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পুরাতন ভবনের সামনে মানববন্ধন করে বিনিয়োগকারীরা।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের দাবি হচ্ছে, চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ৩ শতাংশ সুদে পুঁজিবাজারের জন্য আইসিবির (ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া। এই ১০ হাজার কোটি টাকা মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৫ শতাংশ সুদে নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ বলছে, এ টাকা বরাদ্দ পেলে দেশের পুঁজিবাজারে অর্থের জোগান বৃদ্ধি পাবে এবং স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গড়তে সহায়তা করবে।
বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডকে পুঁজিবাজার এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার দাবিও জানিয়েছে বিনিয়োগকারীরা। এছাড়াও লভ্যাংশের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তাঁরা বলছে, কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ ঘোষণার পূর্বে সরকারকে যে কর দেয় সেটিকেই যেন চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ বলছে, তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানি ভালো মুনাফা করলেও বিনিয়োগকারীদের উপযুক্ত লভ্যাংশ দিচ্ছে না। তাই সংগঠনটি নিট মুনাফার ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহারের ব্যবধান ১৫ শতাংশ করার দাবিও তুলেছে সংগঠনটি। তাদের বক্তব্য হচ্ছে- করহারের ব্যবধান ১৫ শতাংশ করলে ভালো কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে।
শেয়ারবাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন বিনিয়োগকারীদের এই অংশ। এছাড়াও ফোর্সসেল বন্ধ করা এবং নতুন আইপিও ও রাইট শেয়ার ইস্যু বন্ধ করা দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। একই সঙ্গে বৃহত্তর স্বার্থে বাইব্যাক আইন পাস করার দাবিও জানিয়েছে বিনিয়োগকারীদের এই সংগঠন।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বিনিয়োগকারীদের অন্য দাবিগুলো হলো-
- ৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালোটাকা) বিনাসুদে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। এতে বাজারে অর্থের জোগান বৃদ্ধি পাবে এবং বিদেশে অর্থপাচার বন্ধ হবে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
- আইন অনুযায়ী কোম্পানির পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ এবং ব্যক্তিগতভাবে ২ শতাংশ শেয়ারধারণে বাধ্য করতে হবে।
- কোন কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করতে চাইলে কমপক্ষে ১০ শতাংশ শেয়ার আপলোডের বিধান করতে হবে।
- শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধে বিএফআইইউর মতো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) নতুন ইউনিট চালু করতে হবে। এই ইউনিটে বিএসইসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ডিজিএফআই এবং এনএসআইর কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন।