শেখ তাপস বলেন, গণপরিবহন ব্যবস্থার যে বিশৃঙ্খল অবস্থা, এর পেছনে অনেক চক্র এবং স্বার্থান্বেষী মহল রয়েছে। তারা অবশ্যই চাইবে না শৃঙ্খলা আসুক। কিন্তু আমরা দৃঢ়প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছি। আজ আমরা মালিক-শ্রমিক সমিতি এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মিলনায়তনে একটি সভা করবো। যেখানে উত্তরের মেয়রও থাকবেন। যত রকমের বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন, আমরা ঢাকা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হবো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, আমরা বলেছি যেখানে-সেখানে কাউন্টার এবং সেই কাউন্টার ঘিরে রাস্তায় গাড়ি রেখে দেওয়া, যানজট সৃষ্টি করা—এগুলো আর হতে দেওয়া হবে না। এ জন্য যে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন ছিল—আমরা সায়দাবাদ বাস টার্মিনালের আধুনিকায়ন করেছি। সেটার পরিসর বৃদ্ধি করেছি। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের কাজ এই মার্চ মাসের মধ্যেই আমরা শেষ করতে পারব। সুতরাং সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল আধুনিক হওয়ার পর যত্রতত্র কাউন্টারের আর প্রয়োজন হবে না। আগামী এপ্রিল মাস থেকেই যেন সকল বাস কাউন্টার টার্মিনালের ভেতর চলে আসে আমরা সে ব্যবস্থা করেছি। পর্যাপ্ত কাউন্টারের ব্যবস্থা করেছি এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বাসগুলো সড়কে না রেখে তারা টার্মিনাল ব্যবহার করবে। টার্মিনালের ভিতর ডিপোর ব্যবস্থা করেছি। গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করেছি। সেটা ব্যবহার করবে। তাহলে ঢাকা শহরে একটি শৃঙ্খলা আসবে। যেখানে সেখানে আর যানজট থাকবে না। আমরা চাই ঢাকাবাসীকে যানজটমুক্ত একটি সচল ঢাকা উপহার দিতে।
ঢাকা নগর পরিবহন এখন বাস্তবতা এবং ক্রমান্বয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে শেখ তাপস বলেন, ঢাকা শহরে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে বাস রোড রেশনালাইজেশন কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির আওতায় ঢাকা নগর পরিবহন সফলতার সঙ্গে আমরা চালু করেছি। বর্তমানে দৈনিক প্রায় ৩০ হাজার যাত্রীকে ঢাকা নগর পরিবহন সেবা দিচ্ছে। আমরা আরো তিনটি যাত্রাপথ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সুতরাং নগর পরিবহন এখন বাস্তবতা এবং সফলতার দিকে এগিয়ে চলছে।
এরপরে মেয়র নৌপথে মান্ডা খাল পরিদর্শন, বঙ্গবাজার এলাকায় আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাহবুবুল আলম, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ফারজানা ইসলাম ডলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৫ তলাবিশিষ্ট খিলগাঁও সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রের নির্মাণ আগামী বছরের ২৬ এপ্রিলে সমাপ্ত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ কাঠা জমির ওপর এই সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
ভবনের নিচতলায় কার পার্কিং, প্রথম তলায় কাউন্সিলর অফিস ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, দ্বিতীয় তলায় ব্যায়ামাগার, বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য কক্ষ ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের ক্লাব, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র ব্যবস্থা থাকবে।