জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী ঋণ ঠেকাতে টানা পাঁচবার ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু তারপরও অনেক ব্যাংক তা সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয়। পরে মহামারি করোনায় অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা ও ব্যাংকগুলোর ঋণপ্রবাহ বাড়াতে এডিআর ২ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যা গত ১৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এ সুবিধা পাওয়ার পরও ১১টি ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত সীমার ওপরে রয়েছে।
ব্যাংকগুলোরে মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের এডিআর ১১২ শতাংশের ওপরে রয়েছে ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৯২ দশমিক ৯৭ শতাংশ, বেসরকারি এবি ব্যাংকের ৯৩ দশমিক ৭০ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ১০১ দশমিক ২৩ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯৮ দশমিক ৭২ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৯৩ শতাংশ এবং ওয়ান ব্যাংকের এডিআর ৮৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংকের এডিআর ১০২ দশমিক ০৬ শতাংশ, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ৯৫ দশমিক ২৩ শতাংশ, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৯৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৯০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ও বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের (ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিক ইউনিট) ঋণ বিতরণ নির্ধারিত সীমার ওপরে রয়েছে। এর মধ্যে অগ্রণী (ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো) ১৪৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, আমানত অগ্রীম হার (এডিআর) প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলো জন্য ৮৭ শতাংশ এবং ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক ও প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিক কার্যক্রমের জন্য এডিআর ৯০ থেকে বাড়িয়ে ৯২ শতাংশ করা হয়েছে। যা চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর রয়েছে।
অর্থাৎ প্রচলিত ধারার ব্যাংকে ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ বিতরণ করতে পারবে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা এবং ইসলামি ব্যাংকগুলো দিতে পারবে ৯২ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে পারছে না। তারপরও কিছু ব্যাংক সীমার অতিরিক্ত ঋণ দিয়েছে; তারা আসলে কোন খাতে যাচ্ছে তা দেখার বিষয়। তাদের ঋণ যদি উৎপাদনশীল ও এসএমই খাতে যায়, তবে ভালো। কিন্তু অনুৎপাদনশীল খাতে যায় তাহলে যাচাই-বাছাই করতে হবে। কারণ এডিআর সীমার অতিরিক্ত ঋণ যদি ধারাবাহিক বাড়তে থাকে তাহলে ব্যাংক খাতে শঙ্কট সৃষ্টি হবে। তাই মহামারির এ সময় যেন অনুৎপাদনশীল খাতে যেন অতিরিক্ত ঋণ না যায় সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানো উচিত বলে পরামর্শ দেন সাবেক এ গভর্নর।
অগ্রণী ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডোর এডিআর সীমা লঙ্ঘন করে ঋণ বিতরণের বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহম্মদ শামস-উল ইসলাম অর্থসংবাদকে বলেন, আমরা এডিআর কমানোর জন্য কাজ করছি।আমাদের ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রচারনার অভাবে ডিপোজিট আসছেনা। তাছাড়া ইসলামি ব্যাংকিংয়ে দক্ষ জনবলেরও অভাব আছে আমাদের।এডিআর শতাংশের হিসাবে বেশি হলেও টাকার পরিমানে কিন্তু তেমন বেশি নয়।