১৪০ মিলিয়ন চা উৎপাদনের টার্গেট

১৪০ মিলিয়ন চা উৎপাদনের টার্গেট
আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের টার্গেট নিয়ে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চা বোর্ড গ্রহণ করেছে নানা মুখি কার্যক্রম।

এই কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রতিটি বাগানে প্রতিবছর কমপক্ষে আড়াই শতাংশ করে চা বাগান বর্ধিত করা। আর সেজন্য উন্নত মানের চা চারা প্রদান ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করায় প্রতি বছরই চা বাগানের পরিধি ও উৎপাদন দুটোই বাড়ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে চলতি মৌসূমে ১০২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবছর দেশে চা উৎপাদন হয়েছে ৯৩.৮২৯ মিলিয়ন কেজি। যদিও গত মৌসূমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি। গত আগস্টে শ্রমিকদের মুজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তারা কর্ম বিরতী করেন। এ কারণে ওই আগস্ট মাসে উৎপাদন কম হওয়ায় মূলত ২০২২ মৌসূমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে । তবে এখন যেহেতু চা শ্রমিকদের মুজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে, এ কারণে চলতি মৌসূমে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

চা বোর্ডের হিসেব অনুযায়ী দেশে মোট নিবন্ধনকৃত ১৬৭টি টি এস্টেট ও চা বাগান রয়েছে। এতে সর্বমোট দুই লাখ ৭৯ হাজার ৫০৬.৮৮ একরে চা উৎপাদন হয়ে আসছে। এর মধ্যে মৌলভী বাজারে রয়েছে ৭৬টি এস্টেট ও ১৫টি চা বাগান (এক লাখ ৫৬ হাজার ১৯১.৯৪ একর), হবিগঞ্জ জেলায় রয়েছে ২২টি টি-এস্টেট ও তিনটি চা বাগান (৫৪ হাজার ১৬৪.১৬ একর), সিলেট জেলায় রয়েছে ১২টি টি-এস্টেট ও সাতটি চা বাগান (২৮ হাজার ৯৩৬.৩২ একর), চটট্টগ্রাম জেলায় রয়েছে ১৮টি টি-এস্টেট ও তিনটি চা বাগান (৩৪ হাজার ৫৬০.৪৫ একর), রাঙ্গামাটি জেলায় রয়েছে একটি টি-এস্টেট ও একটি চা বাগান (৭৯৪.৯৪ একর), পঞ্চগড় জেলায় রয়েছে আটটি চা বাগান (চার হাজার ৮১৮.২৯৫ একর) এবং ঠাকুরগাওয়ে রয়েছে একটি চা বাগান (৪০.৭৭একর)

অন্যদিকে ২০২১ মৌসুমে উদপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭৭.৭৭৮ মিলিয়ন কেজির বিপরীতে উৎপাদন হয় ৯৬.৫০৬ মিলিয়ন কেজি। একইভাবে ২০২০ মৌসূমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭৫.৯৪০ মিলিয়ন কেজির বিপরীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছিল ৮৬.৩৯৪ মিলিয়ন কেজি। ২০১৯ মৌসূমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪.১৪০ মিলিয়ন কেজি তার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছিল ৯৬.০৬৯ মিলিয়ন কেজি। ২০১৮ মৌসূমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২,৩৯০ মিলিয়ন কেজি তার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৮২.১৩৪ মিলিয়ন কেজি।
২০১৭ মৌসূমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৭০.৬৮০ মিলিয়ন কেজি তার বিপরীতে উৎপাদন ৭৮.৯৪৯ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে যায়।

উৎপাদনের ধারাবাহিকতা দেখে বুঝা যায় প্রতি মৌসূমে দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এদিকে ২০২২ মৌসূমে চট্টগ্রামেও অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গকরে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড করে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে ১৮টি টি-স্টেট ও চারটি চা বাগানে উৎপাদন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রা এক কোটি কেজির বিপরীতে এক কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯৬ কেজি।(১১.১৩৮ মিলিয়ন কেজি)

অন্যদিকে গত ২০২১ মৌসূমে উৎপাদন হয়েছিল ৯৫ লাখ ৭২১ কেজি।(৯.৫৭২ মিলিয়ন কেজি)। এবার (২০২৩) মৌসূমে চট্টগ্রামের ২২টি বাগানে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ কেজি।

উৎপাদনের এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ বর্ধিত আকারে বিদেশে চা ররফতানির যে লক্ষ্যমাত্রা তা পূরণ সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নিদের্শনার আলোকে দেশের চায়ের চাহিদা মেটাতে পরনির্ভশীলতা কমিয়ে বরং উপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রফতানি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ চা বোর্ড।
ইতোমধ্যে সরকারের সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সমগ্র দেশের চা বাগানে চলছে, বাগানের পরিধি বৃদ্ধির সাথে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করার কাজ।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনিস্টিটিউশনের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন দৈনিক বলেন, দেশে এখন ২৩টি কোলোন ও পাঁচটি উচ্চ ফলনশীল জাতের চা পাতার জাত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ চা বোর্ড।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পঞ্চগর, ঠাকুরগাও, নীলফামারী, দিনাজপুর লালমনিরহাট, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি এলাকায় আরো বর্ধিত বাগান তৈরি করা হয়েছে।

অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পোশাকখাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কমে গেছে চাহিদা
২০২৩ সালে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ
২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ
ইভ্যালিতে বড় অফার আজ, ১০ টাকায় মিলবে পাঞ্জাবি
হিলিতে আদা-সবজিতে স্বস্তি, বাড়তি দামে রসুন
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঐক্যমতে শেষ হলো গ্লোবাল বিজনেস কনফারেন্স
১১ মাসে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি
২০২৪ সালে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর
আইসিএবির নতুন সভাপতি ফোরকান উদ্দীণ
বিসিক শিল্পনগরীতে এক হাজার ৯৮ প্লট খালি