ইংল্যান্ডের সঙ্গে দ্বিপাক্ষীয় সিরিজ তো পরে, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দেখা হয়ই না বলতে গেলে। একবার এই ফরম্যাটে টাইগারদের মোকাবেলা করেছিল ইংলিশরা। বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ।
তবে এবার আর কোনো ভুল নয়। ইংলিশদের বিপক্ষে দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিলো নতুন বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশ একাদশে আজ আট বছর পর সুযোগ পেয়েছেন রনি তালুকদার। অভিষেক হয়েছে তরুণ তৌহিদ হৃদয়ের।
নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ফর্ম ছুটছেই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দুটি হাফসেঞ্চুরি করে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করেছিলেন। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ঝোড়ো ফিফটি করলেন শান্ত।
২৭ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন শান্ত। তৌহিদ হৃদয়ও ভালো শুরু করেছিলেন। ১৭ বলে দুটি চার আর ১ ছক্কায় ২৪ রান করে মঈন আলিকে তুলে মারতে যান। বল আকাশে ভাসিয়ে ক্যাচ হন অভিষিক্ত এই ব্যাটার।
বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য ছিল ১৫৭ রানের। শুরুটা দারুণ করে স্বাগতিকরা। ইংলিশ বোলারদের রীতিমত আতঙ্কে রাখেন আট বছর পর দলে ফেরা রনি তালুকদার আর ড্যাশিং লিটন দাস।
উদ্বোধনী জুটিতে ২১ বলে ৩৩ রান তোলেন রনি আর লিটন। আদিল রশিদের গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হন রনি। ১৪ বলে করেন ২১ রান।
লিটন অবশ্য ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। ১০ বলে ১২ করে আর্চারের বলে ক্যাচ দেন মিডঅনে। ৪৩ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৫৪ রান তোলে টাইগারররা।
এরপর অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয় আর নাজমুল হোসেন শান্তও দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ৩৯ বলে ৬৫ রানের ঝোড়ো এক জুটি গড়েন তারা। শান্ত আউট হন ফিফটির পরপরই। ৩০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে ৫১ রান করে মার্ক উডের বলে বোল্ড হন এই বাঁহাতি।
তবে এরপর সাকিব আর আফিফ হোসেন ধ্রুব মিলে ম্যাচ বের করেই মাঠ ছাড়েন। পঞ্চম উইকেটে ৩৪ বলে ৪৬ রানের অবিচ্ছিন্ন এক জুটি গড়েন তারা। সাকিব ২৪ বলে ৩৪ আর আফিফ ১৩ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে ১৬ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৩৫। সংগ্রহটা বেশ বড় হবে বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করলেন হাসান মাহমুদ। ভালো করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদরাও।
১৭ থেকে ১৯-এই তিন ওভারে মাত্র ১২ রান নিতে পেরেছে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে হাসান মাহমুদের দুই ওভারে ইংলিশরা তুলতে পারে মাত্র ৫ রান।
২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৬ রানেই থেমে যায় জস বাটলারের দল।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসভাগ্য ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শুরুটা একদমই ভালো ছিল স্বাগতিকদের।
ওপেনার ফিল সল্ট আর জস বাটলার ১০ ওভারের ওপেনিং জুটিতেই তুলে ফেলেন ৮০ রান। সল্টকে (৩৫ বলে ৩৮) উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে জুটিটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ।
এরপর সাকিবকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়েন ডেভিড মালান (৪)। বাটলার তবু হাত খুলে খেলে যাচ্ছিলেন। হাসান মাহমুদকে ছক্কা মেরে ৩২ বলে ফিফটি করেন, পরের বলে হাঁকান আরেকটি ছক্কা।
বেন ডাকেটও শুরুটা ভালো করেছিলেন। ১৩ বলে ২০ করা এই ব্যাটারকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন মোস্তাফিজ। তখনও ইংল্যান্ড বেশ ভালো অবস্থানে ছিল। ১৬ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ছিল ১৩৫ রান।
১৭তম ওভারের প্রথম বলে ভয়ংকর জস বাটলারকে ফেরান হাসান মাহমুদ। ৪২ বলে ৬৭ রানের ইনিংসে ইংলিশ অধিনায়ক হাঁকান ৪টি করে চার-ছক্কা। বাটলার ফেরার পরই ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড থামে ৬ উইকেটে ১৫৬ রানে।
হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। সাকিব সমান ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। মোস্তাফিজ ১ উইকেট পেলেও খরচ করেন ৩৪ রান। তাসকিন ১ উইকেট পেতে ৩৫ এবং নাসুম আহমেদ দেন ৩১ রান।