রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মো. ওসমান গনির সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি এম এস আলম শাহজাহান ও রেজাউল করিম সরকার রবিন, প্রথম যুগ্ম মহাসচিব মো. ফিরোজ আলম সুমন, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান চৌধুরী, বিপু, কোষাধ্যক্ষ তৌফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ইমরান হাসান বলেন, বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বিরিয়ানির ব্যবসায় ঝুঁকছে। ইতিমধ্যে বেকারি ব্যবসা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে তারা। এখন রেঁস্তেরা খাত নিজেদের কবজায় নিতে বিভিন্ন রেস্তোরাঁ মালিকদের বিরুদ্ধে জোট বেঁধে অপপ্রচার চালাচ্ছে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধে প্রয়োজনে আইসিটি আইনে মামলা করার বিধান চালু করতে হবে।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় বাধা সরকারের বিভিন্ন অধিদপ্তরের অসহযোগিতা ও সমন্বয়হীনতা। একটি অধিদপ্তরের অধীনে কাজ করতে দীর্ঘদিন যাবত দাবি জানিয়ে আসলেও বর্তমানে ১২টি অধিদপ্তর মনিটরিং করছে। দেশের হোটেল-রেস্তোরাঁর ৯৫ শতাংশ শ্রমিক-কর্মীই অদক্ষ ও স্বল্প শিক্ষিত। এসব কর্মীদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে দীর্ঘদিন যাবত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানালেও তারা কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। তাছাড়া একটি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরে অধীনে নিয়ে আসার দাবিও ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমাদের স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি) দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয়নি। দুই সিটি করপোরেশন রেস্তোরাঁ মনিটরিং করতে উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, আইসিডিডিআরবিকে অন্তর্ভুক্ত করলেও প্রধান স্টেক হোল্ডার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ৯টি দাবি জানিয়ে সমিতির মহাসচিব বলেন, রেঁস্তোরা নিয়ে বিভিন্নভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়। মিথ্যা সংবাদ প্রচার করলে আইসিটি আইনে মামলা করার বিধান রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এসি ও নন এসি রেস্তোরাঁয় ৫ শতাংশ রয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্স রযেছে। তবে আগামী বাজেটে নিম্ন ও মাঝারি মানের রেস্তোরাঁ (বাংলা খাবার) ও স্ট্রিট ফুডের ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৩ শতাংশ করার দাবি জানান তিনি। ভ্যাটের সাথে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কর দেওয়ার প্রস্তাবও করেন তিনি।
রেঁস্তোরায় শতভাগ গ্যাস দেওয়া হয়না দাবি করে ইমরান বলেন, ৪০ শতাংশ গ্যাস দিয়ে ১০০ শতাংশের বিল নেওয়া হচ্ছে। হোটেল-রেঁস্তোরায় গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর অনুরোধ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইমরান হাসান বলেন, দেশের বড় বড় ৫টি কোম্পানি বেকারি ব্যবসা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। তারা বিরিয়ানির ব্যবসাও নিয়ে আসছে। এ অবস্থায় আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করে ব্যবসাটি নিজেদের আয়ত্বে নিতে নেতিবাচক প্রচার চালাচ্ছে।
দেশে ৪ লাখ ৮১ হাজার রেস্তোরাঁ রয়েছে। গত ১০ বছরে রেস্তোরাঁ ব্যবসা ৮ গুণ বেড়েছে। আগামী ১০ বছর পর এটি ৩০ গুণ বাড়বে বলে আমাদের প্রত্যাশা। এ অবস্থায় ভালো গাইডলাইন দরকার।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির অন্যান্য দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
-হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল কোর্ট চলছে। এসব মোবাইল কোর্টে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে। তবে মোবাইল কোর্ট যৌক্তিকভাবে করতে হব। জামিন অযোগ্য আইনের ধারা বাতিল করতে হবে।
-করোনায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ৩০ শতাংশ রেস্তোরাঁকে সরকারি সহযোগিতা দিতে হবে। বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নেতিবাচক প্রচারণায় রেস্তোরাঁখাতে সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট কাটাতে প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করতে হবে