গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের ধারণা, রোজা থাকলে পেট খালি থাকার কারণে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়ে। এসব রোগ ছাড়াও অনেকের ভাবনা একইরকম। আসলে শুধু খালি পেটে থাকলে বা রোজার কারণে অ্যাসিডিটি বা অম্লতা বাড়ে না। অনিয়মিত খাবার গ্রহণ বা অস্বাস্থ্যকার খাবার গ্রহণের কারণে অম্লতা বাড়ে। নিয়মিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করলে গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের রোগীদের খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে অবশ্যই ইফতারে ভাজাপোড়া যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। যথেষ্ট পরিমান পানি ও আঁশজাতীয় খাবার খেতে হবে।
হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে রোগ যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে রোজায় সমস্যা হয় না। এজন্য ইফতার বা সেহরির সময় হাঁপানির ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। দিনের বেলায় শ্বাসকষ্ট হলে ইনহেলার নিতেও ধর্মে বাধা নেই বলে অনেক ইসলামী স্কলাস্টিক মতবাদ দিয়েছেন। তবে যারা ডায়ালাইসিসের রোগী অথবা কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে রোজায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাদেরকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখতে হবে। অন্যদিকে হার্টের অসুখে যারা ভুগছেন তাদের রোজা রাখতে খুব একটা বাধা নেই। তবে রোগটি যদি অতি সম্প্রতি হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এসব রোগীদের ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রেই যে পরামর্শ অপরিহার্য তা হচ্ছে, অতিরিক্ত তেলযুক্ত ইফতারি অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।
জন্ডিস ও যকৃতের সমস্যা যাদের রয়েছে তাদের জন্য নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা দীর্ঘমেয়াদে যকৃতের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য রোজা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এসব রোগীদের পানি ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এসব রোগে যারা ভুগছেন তারা রোজা রাখতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। উচ্চ রক্তচাপে যারা ভুগছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবনের সময় পরিবর্তন করে রোজা রাখতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে অবশ্যই ইফতারে কাঁচা ছোলা, সালাদ ইত্যাদিতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না। বাড়তি লবণ শীররে রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।
অনেকেই মনে করেন, রোজার মাসে একটু বেশি খেলে কোনো ক্ষতি হয় না। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। রোজা জীবানাচারণে সংযমের মাস, তাই খাদ্যাভ্যাসেও সংযম পালন করা অত্যাবশ্যক। মনে রাখবেন, খাবার থেকেও কিন্তু শরীরে অনেক ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে। তাই অন্য সময়ের মতো রোজার মাসেও খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকা উচিৎ।