মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বিবৃতিতে এসব বলেন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের বেশ কয়েকটি ‘কণ্ঠসদৃশ অডিও’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ক্যাম্পাসে একধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ‘শাপলা ফোরাম’ প্রচারিত অডিওগুলোর বিষয়বস্তু নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রসহ স্টেকহোল্ডারদের জন্য একই সঙ্গে বিব্রতকর এবং অপমানজনক। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুসারী শিক্ষকমন্ডলী ‘বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু’ জিকির করেন বলে তিনি মন্তব্য করেছেন যা আদর্শিক জায়গা থেকে খুবই আপত্তিকর। এককথায় অডিওগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক প্রকার ইমেজ সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের ‘কণ্ঠসদৃশ' অডিওগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দোযখের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এমনকি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁস ও আর্থিক লেনদেন করেছেন মর্মে অনুমিত হয়। বিষয়গুলো 'শাপলা ফোরামে'র নীতি-আদর্শের বিরোধী হওয়ায় আমরা অডিওগুলো পর্যালোচনা করে স্ক্রিপ্ট তৈরি করার জন্য একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এ ব্যাপারে উপাচার্য মহোদয়ের অবস্থান জানতে চেয়ে বিবৃতি প্রদান করা হয়। ইতিমধ্যে শাপলা ফোরামের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে । এছাড়াও সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক একপ্রস্থ চিঠি মাননীয় উপাচার্যের নিকট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য মহোদয় সংশ্লিষ্ট অডিওসমূহের কথোপকথন তাঁর নিজস্ব মনে করলেও লিখিতভাবে তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করতে সম্মত হননি। তারপরও ‘শাপলা ফোরাম' সতর্ক পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
লিখিত বিবৃতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অনতিবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান শাপলা ফোরামের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান। এছাড়াও ফোরামের সদস্য ড. সাদেক আলী, কেএম শরফুদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন, সদস্য শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে উপাচার্যের বক্তব্য জানতে ফোন দেওয়া হলে তিনি ব্যাস্ততার কারণে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, উপাচার্যের কন্ঠসদৃশ নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক অডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ফাঁস হওয়া অডিও'র ব্যাপারে আলাদা আলাদা বিবৃতিতে উপাচার্যের অবস্থান জানানোর আহ্বান করেছিলো ইবি শিক্ষক সমিতি ও শাপলা ফোরাম। সেসময় বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছিলো ইবি শিক্ষক সমিতি। একই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম