রোববার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, শরিয়াহভিত্তিক ৮ হাজার কোটি টাকার পাঁচ বছর মেয়াদি সরকার বিনিয়োগ সুকুক (ইজারা সুকুক) ইস্যু করা হয়, যা কেবল অভিহিত মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য ছিল। বর্তমানে প্রসপেক্টাসে বর্ণিত শর্তানুসারে এই প্রকল্পের এক-তৃতীয়াংশ বাস্তবায়ন হওয়ায় সুকুকটি সম্মত মূল্যে সেকেন্ডারি মার্কেটে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।
চার হাজার কোটি টাকা করে দুই দফায় বিনিয়োগকারীদের কাছে সুকুকের সার্টিফিকেট বিক্রি করার কথা ছিল, যার বিপরীতে তারা মুনাফা পাবেন। ইসলামী এ বন্ডের (সুকুক) টাকা ‘সারা দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’ বাস্তবায়নে অর্থায়ন করা হবে।
জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সারা দেশে পানি সরবরাহ প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে আট হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। বিনিয়োগকারীদের টাকায় গড়ে ওঠা এ প্রকল্প থেকে পানি কিনবে সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদি এ বন্ডে বিনিয়োগকারীরা বার্ষিক ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ হারে মুনাফা পাবে। প্রকল্প শেষে বিনিয়োগকারীদের মূল টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অন্য সব সরকারি বন্ডের মতো সুকুক বন্ডের বিপরীতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এসএলআর সংরক্ষণ করা যাবে।
শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি বন্ড সাধারণত ‘সুকুক’ নামে পরিচিত। সুকুক একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হচ্ছে সিলমোহর লাগিয়ে কাউকে অধিকার ও দায়িত্ব দেওয়ার আইনি দলিল। এখন থেকে সুকুক হবে সরকারের অর্থ সংগ্রহের নতুন একটি উৎস, যে অর্থ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যয় করা হবে।
এর আগে প্রথম ধাপে এ প্রকল্পের জন্য চার হাজার কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের (ফেসভ্যালু) ইজারা সুকুক ইস্যু করা হয়েছিল ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর।
প্রচলিত বন্ড ও সুকুক বন্ডের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিই হচ্ছে বন্ড। এতে ঋণের পরিমাণ, পরিশোধের সময় ও সুদের হার উল্লেখ থাকে। প্রচলিত বন্ডে সুদ, ফাটকা ইত্যাদি থাকায় তা শরিয়াহসম্মত নয়। আর সুকুক হচ্ছে এমন একটি বিনিয়োগ সনদ, যাতে সম্পদের ওপর মালিকানা দেওয়ার নিশ্চয়তা থাকে। সাধারণত সুকুকধারীরা সম্পদের মালিকানা লাভ করেন এবং মুনাফা পান।
অর্থসংবাদ/এসএম