এ সংকট নিরসনে বেশি দামে চিনি আমদানি করা যাবে কিনা জানতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
মূলত, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত চেয়ে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিটি মঙ্গলবার (২ মে) জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির দাম অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি মেট্রিক টন চিনির দাম ৬৭৫ মার্কিন ডলার। অথচ এক মাস আগেও তা ছিল ৫২০ মার্কিন ডলার। এই বাস্তবতায় সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা চিনি আমদানিতে এলসি বা ঋণপত্র খুলতে ‘ভীতির সম্মুখীন’ হচ্ছে।
৬৭৫ ডলার দরে প্রতি মেট্রিক টন আমদানিতে চিনির মূল্য পড়ে প্রতি কেজি ১৩১ টাকা; যার মধ্যে রয়েছে সরকারের শুল্ক, ভ্যাট ও অন্যান্য কর বাবদ কেজিতে ৩৫ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেও দেশের বাজারে খোলা চিনির দাম সে অনুপাতে বৃদ্ধি না পাওয়ায় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা চিনি আমদানি করতে সাহস পাচ্ছেন না।
এদিকে চিনিতেও আমদানি পর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করেছিল এনবিআর। এ ছাড়া প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানির ওপর প্রযোজ্য ৩ হাজার টাকা ও পরিশোধিত চিনিতে ৬ হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে সংস্থাটি। এ সুবিধা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। শুল্ক কমানো হলেও বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। কেজিতে ৫ থেকে সাড়ে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম কমার কথা থাকলেও উল্টো চিনি বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করায় বিষয়টি সরকারের নজরে আনার জন্য এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই দামে চিনি আমদানি করলে বাজারে খুচরা মূল্য অনেক বেড়ে যাবে। উচ্চ দামে চিনি আমদানির পরে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম পড়ে যায়, তখন ব্যবসায়ীদের বড় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার শঙ্কা আছে। সরকারকে হাতে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে সরকারের পরামর্শ ও সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, বাজারে প্রতি কেজি চিনি ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি আছে। তবে ঢাকার মগবাজার ও মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি চিনি ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। অনেক দোকানে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তাদের কাছে হয় চিনির সরবরাহ নেই কিংবা তারা বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। এপ্রিল মাসে সরকার খোলা চিনির দাম প্রতি কেজি ১০৪ টাকা করেছিল।