চক্রটি ধাপে ধাপে দাম বাড়িয়ে বেসামাল করছে বাজার। সরবরাহ ঠিক থাকলেও পেঁয়াজ, আদা-রসুন, ধনিয়া, গোলমরিচ, জিরা, দারুচিনি, তেজপাতাসহ একাধিক পণ্যের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে।
ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে ভোক্তা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন- কয়েক বছর ধরে কারসাজির ধরন পরিবর্তন হয়েছে। ঈদের সময় দাম না বাড়িয়ে দেড় থেকে দুই মাস আগেই বাড়ানো হচ্ছে।
যাতে বলতে পারে ঈদে পণ্যের দাম বাড়েনি। আর তদারকি সংস্থার চাপে মূল্য কমাতে হলেও অতিরিক্ত মুনাফা রেখেই কমাতে পারে।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে অনেক আমদানি করা পণ্যের দাম যৌক্তিকভাবে বেড়েছে। তবে দেশের বাজারে ব্যবসায়ীরা আদৌ যৌক্তিক দামে বিক্রি করছে কি না তা দেখতে হবে। কারণ কোনো উৎসব এলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে অসাধুরা ভোক্তাকে ভোগান্তিতে ফেলে।
রোজার আগে আমরা সেটাই দেখেছি। এবার কোরবানির ঈদ ঘিরে একই কারসাজি শুরু হয়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- শনিবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা, যা এক মাস আগে ৩৫-৪০ টাকা ছিল।
প্রতি কেজি আমদানি করা আদা বিক্রি হয়েছে ৩৫০, যা আগে ২৫০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৮০-১৯০ টাকা, যা এক মাস আগে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২৬০০, যা আগে ২২০০ টাকা ছিল।
লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা কেজি, আগে ১৫০০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা, মাসখানেক আগে ৬৫০ টাকা ছিল।
ধনিয়াগুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা, যা আগে ১২০ টাকা ছিল। গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজি, আগে ৯১০ টাকা ছিল।
এছাড়া কেজিতে ৫০-৬০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি মেথি ১২০-১৬০ টাকা, আলু বোখারা ৪৮০-৫০৪ টাকা, কিশমিশ ৪৪২-৪৭০ টাকা, পাঁচফোড়ন কেজিপ্রতি ১৫২-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মসলা বিক্রেতারা বলেন, মসলার বাজার আমদানি নির্ভর। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমদানি করে। তারা সেখান থেকে দাম বাড়িয়েছে। যে কারণে সব সায়গায় দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তাই আমদানি করা মসলা পণ্যের দাম বাড়ছে। এছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এজন্য দেশি পেঁয়াজের দাম বেশি। তবে বাজারে পর্যাপ্ত দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ আছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চীন এবং মিয়ানমার থেকে আদা আমদানি হচ্ছে। তাই দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা কম।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদ ঘিরে আগে থেকেই বাজারে তদারকি জোরদার করা হয়েছে। পণ্য কেনা ও বিক্রির মধ্যে যে পার্থক্য তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।