বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী স্টেডিয়াম হ্যান্ডবল খেলায় সবসময়ই সরব থাকে। আন্তর্জাতিক হ্যান্ডবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে কয়েকদিন ছিলো উৎসবের আমেজ। ১৩ মে থেকে শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু আইএইচএফ চ্যালেঞ্জ ট্রফি। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৭ ও ১৯ দুটি বয়সভিত্তিক দল খেলছে।
উভয় দলই ফাইনালে উঠেছে। দুই ফাইনালেই প্রতিপক্ষ ভারত। পল্টনের শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী স্টেডিয়ামে বুধবার (১৭ মে) হ্যান্ডবল অনূর্ধ্ব-১৭ ফাইনালে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ বনাম ভারত। ফাইনালের আগে যেমন শিরোপ জয়ের প্রত্যাশা জানালেন দলের অধিনায়ক মোসা. মারফি এবং সহ-অধিনায়ক পূর্ণতা রহমান ইয়ানা। ফাইনালের ফলাফল তাই ছিলো।
রাউন্ড রবিন লিগের দেখায় দারুণ লড়াই করে ভারতের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেই হারের মধুর প্রতিশোধ মেয়েরা নিল ফাইনালের মঞ্চে। জমজমাট ম্যাচ জিতে বঙ্গবন্ধু আইএইচএফ চ্যালেঞ্জ ট্রফি উইমেন্স হ্যান্ডবলের অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে শিরোপা জিতল বাংলাদেশ।
পল্টনের শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে বুধবার ভারতকে ৪৬-৪৩ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
শুরু থেকে ভারতের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়তে থাকে স্বাগতিকরা। দুই দলের প্রথমার্ধ শেষ হয় ২০-২০ সমতায়। দ্বিতীয়ার্ধে আধিপত্য করে কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নেয় মেয়েরা।
কোচ ডালিয়া আক্তারের অধীনে দারুণ ছন্দে ছিল দলটি। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হারলেও মালদ্বীপ এবং নেপালের বিপক্ষে দাপুটে জয় নিয়েই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে অ-১৭ হ্যান্ডবল দল। দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়েরই আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা ছিলনা। তরুণ এই দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ডালিয়া ও পূর্ণতা।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারতের কাছে হারলেও ফাইনালে ঘুড়ে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক মারফি বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে আমাদের কিছু ভুল ছিল। আমরা সেই ভুলগুলো নিয়ে কাজ করেছি, নিজেদের ইমপ্রুভ করছি, এসবই ফাইলালে জয় এনে দিয়েছে।’
প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলে দলকে শিরোপা এনে দেয়ার অভিজ্ঞতা জানালেন পূর্ণতা রহমান ইয়ানা। তিনি বলেন, 'আমার প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশকে শিরোপা উপহার দিতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত বোধ করছি। ফাইনালে ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল, আমরাও ছিলাম আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছি, তাই এই জয় ধরা দিয়েছে।'
পূর্ণতা বলেন, পুরো টুর্নামেন্ট থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। নতুন অভিজ্ঞতাগুলো আগামীতে কাজে লাগবে। যত বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে পারবো তত অভিজ্ঞতা অর্জন হবে। এগুলো আগামীতে আমাদের আরও বেশি পরিণত হতে সাহায্য করবে। দেশকে আরও অন্তর্জাতিক শিরোপা উপহার দিতে চাই।’
স্কুল থেকেই হ্যান্ডবল খেলার শুরু মারফি-পূর্ণতার। বড়দের হ্যান্ডবল খেলা দেখেই এই খেলার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা। মারফি বলেন, ‘স্কুলে হ্যান্ডবল খেলা শুরু করেছিলাম। তখন থেকেই খেলাটাকে ভালোবেসে ফেলি। ’
স্কুলের সিনিয়রদের হ্যান্ডবল খেলা অনুশীলন করতে দেখে এই খেলার প্রতি ভীষণ আগ্রহ অনুভব করেন পূর্ণতাও। তিনি বলেন, ‘স্কুলের সিনিয়র আপুদের হ্যান্ডবল খেলতে দেখে এই খেলাটা ভালো লাগে। এরপর স্কুল হ্যান্ডবল দলে খেলা শুরু করি। সেখান থেকেই হ্যান্ডবলে আমার পথচলা শুরু।