সূত্র জানায়, মাত্র ২২ কার্যদিবসের ব্যবধানে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের শেয়ারদর আড়াইগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ এপ্রিল এমারেল্ড অয়েলের শেয়ারদর ছিল ৩২ টাকা ৭০ পয়সা। ২১ই মে লেনদেন শেষে শেয়ারটির দর স্থির হয় ৯৫ টাকা ১০ পয়সায়। অর্থাৎ ২৩ কার্যদিবসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৬২ টাকা ৪০ পয়সা বা ১৯০ দশমিক ৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় বেশি ঋণের পরিমাণ। ডিএসইর তথ্য বলছে, জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৫৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। বিপরীতে ২০১৬ সাল সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির মোট ঋণের পরিমাণ ৯৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ রয়েছে ৬২ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আর ৩০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা স্বল্প মেয়াদি ঋণ। অপর একটি সূত্র জানায়, বেসিক ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকে কোম্পানিটির ৮১ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। যা বর্তমানে সুদসহ প্রায় ১০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর মাত্র তিন বছর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। পরের বছর (২০১৬) ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেওয়া হয়। এরপর গত ছয় বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের কোন লভ্যাংশ দেওয়া হয়নি।
সর্বশেষ ২০১৬ সালে আয় করতে পেরেছে এমারেল্ড অয়েল। ওই বছর কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ৩ টাকা ৩৩ পয়সা। সম্প্রতি ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানিটি। তিন বছরেই কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ায় বড় লোকসান গুণতে হয় এমারেল্ড অয়েলকে। ২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি ৩৪ টাকা ৩৪ পয়সা লোকসান দেয় প্রতিষ্ঠানটি। পরের বছর (২০১৮) সালে লোকসানের পরিমাণ কমে ১ টাকা ৯৭ পয়সায় (শেয়ার প্রতি) নেমে আসে। ২০১৯ সালেও শেয়ার প্রতি ১ টাকা ১৪ পয়সা লোকসান হয় কোম্পানিটির।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, আমরা যতকিছুই বলি কোন লাভ নাই। কিছু লোক আছে তারা কোম্পানি ভালো নাকি ব্যবসা বন্ধ এগুলো বিবেচনা করে না। এদের সাথে আবার কোম্পানির লোকদের যোগাযোগ আছে। এরাই এখন বাজারে সক্রিয়। একবার এক কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ায় এরা।
তিনি বলেন, সিরিয়াল ট্রেড বা সিন্ডিকেট ট্রেড হচ্ছে কিনা এগুলো বিএসইসির (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) দেখার কথা। অতীতে অনেক শেয়ারের দাম এভাবে বেড়েছে। মূলত মার্কেটে ভালো শেয়ারের কোন দাম নেই। ফ্লোর প্রাইসের পর ভালো শেয়ারের কদর নেই, সব ফ্লোরে পড়ে আছে।
এসব বিষয়ে জানার জন্য এমারেল্ড অয়েলের কোম্পানি সচিব সাদিয়া আফরিন অর্থসংবাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি কোম্পানির সিআরও’র সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। তবে কোম্পানির সিআরও’র সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।