রোববার (২১ মে) দুপুর দেড়টায় সিরাজগঞ্জ র্যাব-১২ সদর দপ্তরে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল) লাল পাতা ও সর্বহারাসহ বেশ কয়েকটি চরমপন্থী দলের সদস্যরা আত্মসমর্পণ করেন।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আপনারা জানেন ৮০’র দশক থেকে এই এলাকার কয়েকটি জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সর্বহারা ও চরমপন্থীরা ঘাঁটি তৈরি করে। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ‘সন্ত্রাসের জীবন ছাড়ি, আলোকিত জীবন গড়ি’ স্লোগানে চরমপন্থীরা আলোর পথে ফিরে আসে। প্রধানমন্ত্রী তখন যেমন সবাইকে পুনর্বাসন করেছিলেন, তেমনই প্রধানমন্ত্রী আজকেও আমাকে আসার আগে বলেছেন, আপনারা যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
তিনি বলেন, র্যাব নানাবিধ ভালো কাজ করে যাচ্ছে, আস্থা অর্জন করেছে। এ জন্যই চরমপন্থীরা আত্মসমর্পণের জন্য র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। র্যাব আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি নানা মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এক সময় এই ৭ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আতঙ্কের নাম ছিলো চরমপন্থা। প্রতিদিনই চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই ও অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটতো এসব এলাকায়। চরমপন্থী আতঙ্কে দিন কাটতো সাধারণ মানুষের। এসব এলাকার চরমপন্থী নেতা ও সদস্যদের অন্ধকার থেকে আলোতে ফেরাতেই এমন আয়োজন বলে জানায় র্যাব।
এর আগে র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার আবুল হাশেম সবুজ জানান, চরমপন্থীদের আত্মসমর্পণ ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে র্যাব। এছাড়া অপরাধের জীবন থেকে চরমপন্থী সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে র্যাব ২০২০ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে। চরমপন্থী দলের নেতা ও সদস্যদের আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে গরুর খামার, পোলট্রি ফার্ম, মাছ চাষ, চায়ের দোকান, ভ্যান-রিকশা ও সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।
র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন এর সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, পুলিশ মহা-পরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাব-১২ অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মারুফ হোসেন, সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কে.এম হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার, সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. আব্দুল আজিজ, সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানসহ র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।